আমার বয়েস তখন কত?
দুই কিংবা তিন মাস!
মায়ের অজান্তে বেড়ে উঠা এই আমি।


সময়টা ছিল কিন্তু বেশ সুখের,
হাত ছিল, পা ছিল, ছিল ক্ষুদ্র এ দেহে প্রাণ,
মা তার আদিম বাসনায় মত্ত নিত্য দিন,
আমি অনুভব করি,
আমার পিতার কি অসীম ভালোবাসা
তার ভালবাসার মানুষের জন্য।


দেহের ভিতরে দেহ, প্রাণের ভিতরে প্রাণ
সুখের ভিতরে সুখ আর আনন্দের ভিতরে আনন্দ,
কেঊ জানে না, কিছুই জানে না।
শুধু আমি জানি আমি আছি, আমি আসছি
এই তো কিছু দিন মাত্র,
তারপর নতুন আলো, নতুন পৃথিবী।


সুখ বুঝি আর সইলো না!


কি বীভত্স! কি নোংড়া!
আমি ভাবতে পারি না পারছিনা।
সেদিনও ঘুমিয়ে ছিলাম,
হটাৎ,
আমার অনুভবে, আমার ছোট দেহে
আঘাতের  চিহ্ন একে দিলো এক পাষাণ!
আমি বুঝলাম, কে যেন মানুষ্য তৈরী
দুটি ধাতব দ্রব্য দিয়ে আমার দিকে ধেয়ে আসছে,
ভয় পেয়ে গেলাম, জোরে জোরে মাকে ডাকলাম,
না, মায়ের কোন সাড়া নেই,
ধাতব খন্ডটি কিছু বুঝার আগেই
আমার বাম হাতটি কেটে নিয়ে গেল,
এভাবে ডান হাত, পা, নাড়ী-ভূড়ি, মাথা
অতপর আমার ক্ষুদ্র দেহকে ছিন্নভিন্ন করে
বস্তাবন্দী করে করে রাখে।


আমি চিৎকার করে বললাম-
'মা মা আমকে মেরো না ,আমাকে মেরো না
আমি বাঁচতে চাই, আমাকে বাঁচতে দাও!
আমার অব্যক্ত কথাগুলো কারো কর্নে প্রবেশ করেনি!


আমার অভিষপ্ত মা,
আমাকে ছেড়ে চলে যায়
তার সুখের আস্তানায়,
আমার জায়গা হয়, রাস্তার কোন এক ডাস্টবিনে!
এক সময় দিনের আলো নিভে যায়
পড়ে থাকি আমি নিরালায়, একা নির্জনে।


পরের দৃশ্যে কি আছে আমি জানি না।


হে বিশাল আকাশ, হে চন্দ্র, সূর্য,
কার সুখ ভোগের ফল আমি?
কেন আমি প্রস্ফুটিত হওয়ার আগে ঝড়ে গেলাম??


সিলভার স্প্রিং
০৭/০৮/২০১৩