এখনো স্পস্ট মনে পড়ে
বছরটা উনিশ একানব্বই
সবে মাত্র নটরডেম কলেজে আইকমে ভর্তি  হয়েছি।
কিছুদিন ক্লাশ করার পর লম্বা ছুটি;
মনে এক ঝিলিক স্বপ্ন ও আশা নিয়ে
বাড়ির পানে ছুটেছে মনপাখী।
মায়ের হাতের রান্না,বন্ধুদের সাথে আড্ডা
বিকেলে কদম আলী ডাক্তারের চেম্বারে বসে চা-পান;
রাত বাড়লেই কবিতার সাথে বসবাস!


বিকাল চারটা-
গুলিস্থান থেকে কালীগঞ্জের বাস;
হাতে ছোট্ট একখানা ব্যাগ;
ব্যাগের ভিতর হিসাব বিজ্ঞানের কিছু বই, কাপড়
এব্ং আমার প্রিয় কবিতার খাতাটি।
তখন সবে মাত্র লেখা-লিখি শুরু করেছি;
লেখার শুরুটা হয়েছিল কবিতা দিয়েই
তাই কবিতার প্রতি একটা অন্যরকম ভালোবাসা,
আছড়ে পরে হৃদয়ে।
কবিতার খাতাটি হাতছাড়া করিনি কখনো।
খাতার ভিতর আশিটি কবিতা আমার জন্য অনেক
প্রাপ্তি ও আবেগের।


রিক্সা থেকে নামবো-
তখনই এক ট্রাফিক পুলিশ গতিরোধ করে
আচমকা ব্যাগটা টেনে নেয়,
সাথে থাকা কলেজ আইডি কার্ডটিও!
খুব ভয় পেয়েছিলাম!
ঢাকা শহরে নতুন কি-না।
ট্রাফিককে অনেক অনুরোধ করলাম
মন গলেনি, টাকা চায়!
বাবা তার মাইনে থেকে চল্লিশ টাকা দিয়েছিল;
ভাড়া বাবদ,
মাত্র বার টাকা ছিল, নিতে চায় নি,
ভয়ে বাড়ি ফিরে গেলাম। সব ফেলে!


এক মাস পর কলেজ প্রিন্সিপালের সহায়তায়
ফিরে পেলাম কলেজ আইডি!
আমার প্রিয় আশিটি কবিতা ও কবিতা খাতা
আর ফিরে পাইনি,
মনটা বিষাদে ভরে গেল,
প্রচন্ড অভিমান হল, কিন্তু কার প্রতি?
আমাদের সমাজ না-কি পুলিশ?


আজও আমি হারিয়ে যাওয়া কবিতা
স্বপনে খুঁজে  বেড়াই,
কেবলই খুঁজে  বেড়াই।