(যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন অবৈধভাবে বাসের অপরাধে বাংলাদেশী যুবক জুনায়েতকে তার প্রিয়তমা শ্বেতাঙ্গিনী স্ত্রীকে ছেড়ে দেশে ফিরতে বাধ্য করে  ফেডারেল সরকার। প্রতিবেদনটি ওয়াশিংটন পোষ্টে ফলাও করে ছাপা হয়।)


বিমানের ককপিটে বসে থাকা একটি ছবি;
ক্রমশ শুন্য থেকে শুন্যের সীমানায় বহমান,
স্বচ্ছ কাচের জানালায় মেঘের আনাগোনা,
পৃথিবী তখন এক একখন্ড অস্পষ্ট
কোন এক অচেনা ছবি।


জুনায়েতের চোখের কোনে জল,
সামনে রাখা ল্যাপটপের হৃদয়ের হার্ডিস্কে জমে থাকা
স্মৃতির তারার মেলা,
মেসেজ বক্সে রোমাঞ্চিত দিনের কথা
দেখার ক্ষণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস
আদালতের করিডোর, বিদায় আলীঙ্গণ!


সেদিনও আকাশ নীল ছিলো,
জুনায়েতের স্বপ্ন ছিলো চোখে,
বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ঘাসের উপর
এলোকেশী শ্বেতাঙ্গ দেবীর মিষ্টি হাসি,
পড়াশোনার ফাঁকে লং ড্রাইভ
রবীন্দ্র সঙ্গীতের অবগাহণ,
হাসি, আনন্দ-পুরনো দিনের কথা,
এ যেন এক স্বপ্নের পৃথিবীকে পাওয়া।


একদিন বাহুডোরে আটকে যায় দুটি মন,
প্রাবাসী জীবনের উত্তাল সাগরে
ভেসে বেড়ায় দুটি প্রান।
কাগজপত্রহীন জীবনের গতি,
কঠোর পরিশ্রম, পড়াশোনা, লাইব্রেরী,
নাগরীক সভ্যতার সাথে যান্ত্রিক পথ
চলছে তো চলছেই।


সেদিন সুখের আকাশে ছিলো কালো মেঘ,
শনিবারের বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারে ভাসে তরী
গান, আধ বাংলা কথা, রঙ্গীন দিগন্ত,
অতপর একটি ট্রাক!
পাল্টে যায় অসাবধান জীবন,
কঠোর আইনের চুলচেরা বিশ্লেষণে
অবৈধ জীবনের তালিকায় জুনায়েত!


দিন যায়, চলে যায় সময়,
আদালতের সমনে নিজ ভূমের আহবান,
প্রবাসের খাতায় ত্যাগপত্রের হিসেব-নিকেশ
প্লাস দুঃখ-বেদনা, মাইনাস ভালোবাসা
ইকোয়েল ব্যাবচ্ছেদ!


শ্বেতাঙ্গিনীর চোখে বাংলার জল,
উত্সুক জনতা- সাংবাদিক-ক্যামেরা,
দৃশ্য ক্রমশ শেষের দিকে ধাবমান,
ককপিট থেকে ভেসে আসে কন্ঠ,
বাংলাদেশের সবুজ বক্ষে অবতরণ।


জুনায়েতের সামনে প্রিয় বাংলা
পিছনে প্রিয়তমা শ্বেতাঙ্গিনী বধু,
মানুষের তৈরী অমানবিক রীতির
বিধানে ভালোবাসার ব্যাবচ্ছেদ।


০৬/১০/২০১৪