মৃণালিনী তুমি যাও নি?
কি করে যাই বলতো? যেতে তো পারলাম না।
কেন? এখনও কি আমার জন্য চিন্তা হয়?
সে তো একটু হয় বৈ কি?
কিন্তু এভাবে থাকবে কি করে?
জানি না।
দেখ, তোমার সবকিছুই তো নিয়ে গেছে।
তাতে কি হয়েছে? তুমি তো আছ।
আজ তোমার সব চুরি হয়ে গেছে, কাল আমার হবে।
সেইজন্যই তো গেলাম না, কালই যাব তোমার সাথে।
তোমার কফিনটাও তো নিয়ে চলে গেল।
হ্যাঁ, আমি তো সবে এসেছি, তাই নতুনই তো ছিল।
তোমার বড়দা তো ভালোভাবেই বানিয়েছিল।
জানি, গলার কাঁটা টাকে তো বিদেয় করেছিল।
এখনও সেই একই রকম রয়ে গেলে।
ঠিক আছে, আজ তো তোমার সাথেই থাকতে হবে।
সে আমি কি না বলেছি? কত দিনের সাধ পূর্ণ হবে।
হ্যাঁ চল, বিশ্রাম করি, একসঙ্গে একই কফিনে।
তোমার দেহ, কফিন, সব নিতে কখন এসেছিল?
ঐ তো গীর্জার ঘড়িতে তখন রাত দশটা বাজছিল।
হ্যাঁ হ্যাঁ, দু ঘণ্টার মধ্যেই তো নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল।
তুমি জানো? কোথায় আমার দেহটা নিয়ে গেল?
দেখ, কঙ্কালটা বিক্রী করবে কোনও মেডিকেল কলেজে।
তোমারটাও কি করবে? শুধু কঙ্কাল টাই তো আছে।
জানি না, এখন দেখছি মৃত্যুর পরেও অদৃষ্ট থাকে।
রাত দশটা বাজছে, চোরগুলো এসে গেল।
হ্যাঁ, ঐ শ্যাওড়া গাছটায় গিয়ে বসি চল।
যাঃ! ঢাকনা খুলতে গিয়ে কফিনটা ভেঙ্গেই ফেলল?
সত্যি, এখনও একই রকম রয়ে গেলে।
আমার কঙ্কালটা যেন যত্ন করে বার করে।
সে ওদের ব্যাপার, ভেঙ্গে গেলেও জুড়ে দেবে।
ঠিক বলেছ, দাম পাবে না তো ভেঙে গেলে।
চুপ চুপ, শোন তো কি বলছে?
ঠিকই আছে, আরোগ্য মেডিকেল কলেজেই যাবে।
গতকাল যেখানে আমার দেহটা নিয়ে গেছে?
হ্যাঁ, হ্যাঁ, একই মেডিকেল কলেজে।
আমাদের কঙ্কাল দুটো তো এক ঘরেই রাখলো।
দেখ,যদি চিরদিন থাকে, তাহলে ভালোই হলো।
ঠিক বলেছো, এবার বোধহয় স্বপ্ন সত্যি হলো।
সারা জীবনের হতাশাটাও এবার দূর হলো।