একটা নিখুঁত কবিতা লিখতে বসেছি,
মনে হল, একজন সমালোচক যদি থাকতো,
তাহলে ভুল ঠিক, যা লিখছি, আগেই শুদ্ধ হয়ে যেত।
সেই মতো দুজন সমালোচক কে বসালাম-
টেবিলের উল্টো দিকে, আমি-১ এবং আমি-২।
লিখলাম-
যখন অন্তরের ভাষা সাবলীল ঝর্ণার মতো বহমান,
উচ্চৈস্বরে জলপ্রপাতের মূর্ছণায় সতত দৃশ‍্যমান-
সেই সূর্যালোকে জলকণায় সৃষ্ট সাত রঙের বাহার।
সমুদয় পাঠক কুল, কাব‍্যের জলকণায় সিক্ত হইয়া
পরম আনন্দে সেই অববাহিকায় অবগাহন করিয়া
সন্তুষ্ট চিত্তে কবিতাটির রস আস্বাদনে প্রীত হইয়া
মনের মণিকোঠায় সযত্নে স্থান দিবেন।


এই পর্যন্ত লিখে তাকালাম টেবিলের উল্টো দিকে
দেখলাম দুজনেই মন্তব‍্য করার জন‍্য মুখিয়ে আছে।
আমি-১ বলল: নিজের ঢাক নিজে পেটানো।
আমি-২ বলল: রাবিশ।


এবার ঠিক করলাম সমালোচক ছাড়াই লিখব
তাই নতুন করে লিখতে শুরু করলাম:


যখন আসেনা কোনও কবিতা, কবির.অন্তরে,
লেখার বাসনা নিয়ে, অন্তর্দহনে দগ্ধ বারে বারে,
যা কিছু লেখার আছে, হয়েছে পুরোনো বহু আগে,
কল্পনার নতুন হতাশায়, অন্তিম বরণ কি আজ হবে?


সামনে অতল গহ্বর, হাতছানী দিয়ে বলে-
জন্ম থেকে বড় হওয়া, সূর্যোদয় পূবাকাশে দেখে,
সূর্য অস্ত গেলে, আঁধার রজনী ঘিরে ফ‍্যালে,
প্রাত‍্যহিক দিনের সূচনায়, নতুন ভোরের নামই লেখে,
কবিতা লেখা হয় তাই, একই কথা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে।


নীল শূণ‍্যতায়  বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের গতিবিধি নিরক্ষণের-
অনুসন্ধিৎসা নিরন্তর চলে, নূতন নক্ষত্র আবিস্কারের,
সমুদ্রের অতল গহ্বরে, মনটা ডুবুক একাকিত্বে,
রত্নরাজী আহরণ করে, কবিতা সাজুক রাজবেশে,
অথবা, হোক না বিলীন নীল নীলিমার শূণ‍্যে-
কিংবা হয়ত নিজস্ব হৃদয়ের গহীন অন্তপুরে।
আজ না পারলেও, কোনদিন সাফল‍্য তো আসবেই...