সাদা সাদা সুখস্বপ্নের মেঘগুলো ভেসে ভেসে এসে,
অচিরেই মিলিয়ে যায় দূরদূরান্তে বাতাসের বেগে-
বৃষ্টিস্নাত হবার বাসনা অধরাই থাকে।
মেঘের আড়ালে সূর্য, এই রোদ, এই ছায়া,
প্রখর তপন যেন খেলে, লুকোচুরি খেলা,
বর্ষা আসন্ন, বলে যায় খণ্ড খণ্ড সাদা মেঘ কায়া।


পূবাকাশে পুঞ্জীভূত স্তরে স্তরে মেঘমালা,
পড়ন্ত সূর্যের আলোকচ্ছটায়, স্থির বিশ্রামরতা,
কখনও লাল, কখনও গোলাপি, কখনও কমলা,
যেন কোন চিত্রকরের, তুলির টানের দাম্ভিকতা।
প্রতি মুহূর্তে চিত্রপট পরিবর্তনের নেশায় চপলা-
গোধূলি লগনে তখন আকাশে, রক্তিম যবনিকা।


একটা গুমোট গরম তখনও হল্কা ছড়াচ্ছিল,
ঈশান কোণের কালো মেঘের রেখাগুলো-
কালবৈশাখীর আগমনবার্তার সূচনা করে,
আকাশটা কালো মেঘের চাদরে ঢেকে ফেলল।
বর্ষা সিক্ত হাওয়ায় সান্ধ‍্য আঁধারে, গৃহ বধুদের-
বারংবার শঙ্খধ্বনিতে, দিগ্বিদিক মুখরিত হলো।


প্রকৃতি তখন বজ্রনিনাদে বাজাচ্ছে রণভেরী-
পক্ষীহৃদয় কম্পিত হলো সঙ্কেত অশনি,
তড়িৎ আলোক বিদীর্ণ করে, আঁধারের রজনী।
উথালি পাথালি নদী মোহনাতে
ডিঙি যত গেছে, ফেরেনি তো কেহ-
নদী তীরে কাটে, উৎকণ্ঠার অতন্দ্র যামিনী ।


নিশি অবসানে দুর্যোগ কাটে, প্রভাত আলোকে-
সারি সারি ডিঙ্গি, দিগন্তে ভেসে ওঠে,
ধীবর গ্রামের রমনীরা সব, উল্লাসে মেতে ওঠে।
অশ্রুসজল ধীবররা ফেরে, সঙ্গী ত্রয়ীর শোকে,
যারা ফেরে নাই, তাদের বিরহে, ক্রন্দন রোল ওঠে,
ধীবর জীবিকা, তাও বেঁচে থাকে মৃত‍্যু আলিঙ্গনে।