তোমার অপেক্ষায় আজও বন্দি, লেক গার্ডেন্সের সেই ঝিলের ধারে।
সেই তো তিন বছরের ব্যবধান, যেন তাজা বাতানুকূলতার শীতল ঘ্রাণে
সামনাসামনি বসে আছো মেট্রোর স্পন্দন হৃৎপিণ্ডে।
সঙ্গটা ছিল মাত্র কুড়ি মিনিটের। সেটাই ছিল অফুরন্ত অতি আবেগময়,
সেটাই ছিল আমার মেঘলা আকাশের সূর্যোদয়।
তোমার তির্যক নয়নের মোহিনী চাউনিগুলো আজও হৃদয়ে সুসজ্জিত।
তোমার কথা বলার অজুহাতগুলো মনের ডাইরিতে আজও সংরক্ষিত।
তোমার নিয়ে আসা টিফিন, যখন না খেয়ে আমাকে তুমি খাইয়ে দিতে নিজের হাতে,
আমি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতাম।
যেন ছোটবেলার সেই মায়ের ছোঁয়া, সেই আনন্দময় মুখ
আহা! এতো সুখ, এতো উল্লাস, এতো ভালোবাসা আর কোনদিন অনুভব করিনি।
তুমি এখন কোথায় বৃষ্টি! তোমার কি মনে আছে সেই দিনের কথা?
যেইদিন লেক গার্ডেন্সে শত প্রেমিক-প্রেমিকা, বন্ধু-বান্ধবের মাঝে
নত হয়ে হাঁটু গেড়ে, গোলাপের স্টিক হাতে বলেছিলাম–
‘‘বৃষ্টি আই লাভ ইউ, আই লাভ ইউ বৃষ্টি’’ তোমার কি মনে আছে?
আজ প্রকৃতি কাঁদছে। হাঁটু জলে আমার শহরবাসী,
কত বৃষ্টি না দেখেছে তারা, কিন্তু আমার বৃষ্টিকে তারা দেখেনি।
কিন্তু আমি দেখেছি আমার বৃষ্টিকে, আমি অনুভব করেছি, আমি কবিতাও লিখেছি,
আমি উষ্ণ স্পর্শও করেছি, আমি বিনুনি করেছি, আমি খাইয়েও দিয়েছি আমার বৃষ্টিকে।
আজ আর নেই আমার বৃষ্টি, আজ আর নেই আমার বর্তমানের বাস্তবতা।
শুধুই অতীতের স্মৃতি আমার সর্বাঙ্গ জুড়ে, আজ অভিযোজিত নির্মল একাকীত্বতা।
আজ মেঘাচ্ছন্ন আকাশে সুপ্ত বাসনার বিড়ম্বনার
প্রলেপময় গর্জন,
যেন সমস্ত ক্ষত নিবারণের প্রকৃতির ক্ষণিকের চেষ্টায় তোমার আভাস।
আজ তুমি প্রকৃতির বৃষ্টি রূপে ঝরছ আমাদের সেই লেক গার্ডেন্সের ঝিলের ধারে,
তোমার স্পর্শ দিতে। আমার বৃষ্টি রূপে।


রচনাকাল -
কলকাতা
২৭/০৬/২০২১