হিং টিং ছট্‌, ফট ফটা ফট ভানুমতির খেল।
কোথায় যেন হারিয়ে গেল কু ঝিক্‌ ঝিক্‌ রেল।।
কয়লা খেয়ে পেটে আগুন ধোঁয়ায় ভরা শির।
হারিয়ে গেছে দৌড়ে চলা দানবীয় সেই বীর।।
হারিয়ে গেছে কুমোর পারা, হারালো গরুর গাড়ী।
কন্যা এখন পাল্কী চড়ে যায়না শ্বশুর বাড়ি।।
ছিপখানি আর রয়না বাঁধা ঐ যে নদীর ঘাটে।
ময়রা মুদি চোক্ষু মুদি ঢোলে না তার পাটে।
যায়না শোনা হুন হুনা আর কোথায় গেল টোকা।
হারিয়ে গেছে মেঠো পথে সেই সে ন্যাংটো খোকা।।
হারিয়ে গেছে ডাংগুলি আর পিট্টু কাঞ্ছা খেলা,
হারিয়ে গেছে ছু কিৎকিৎ, রান্না-বাটির মেলা।।
মাষ্টারের ঐ তেল মাখা বেত কেউ রেখেছে তুলে,
গুরুজনের চরণ ছোঁয়া তাও গিয়েছি ভুলে।।
হারিয়ে গেছে খেলার মাঠের কচিকাচার দল।
শিশুরা সব মোবাইল হাতে নেই তো কোলাহল।।
হারিয়ে গেলো গল্পদাদু ঠাকুরমায়ের ঝুলি।
আকাশবাণীর প্রভাতী সুর তাও গিয়াছি ভুলি।।
হারিয়ে গেছে রাখাল রাজার মিষ্টি বাঁশীর তান।
মনের সুখে ঝুপুর ঝাপুর পুকুর জলে স্নান।।
হারিয়ে গেছে মাঠ – পুকুর নেইতো বাঁশের ঝাড়।
বাউল বাতাস ধানের ক্ষেতে দেয় না দোলা আর।।
হারিয়ে গেল পত্রলেখা হারালো কোলাকূলি।
হারিয়ে গেলো পৌষ-পার্বন পায়েস পিঠে পুলী।।
হুস্‌ মন্তর গিলি গিলি ফুঁ একের মধ্যে তিন,
এক লহমায় বদলেছে যুগ এসেছে নতুন দিন।।
মা-বাপ থাকেন বৃদ্ধাশ্রমে শিশুরা ভাড়ার ঘরে।
টাকার পিছে স্বামী - স্ত্রী তে কেবল দৌড়ে মরে।।
বললে সবাই সে দিন গেছে সময় বদলে গেছে।
এখন কি ভাই ফলছে কাঁঠাল পাতিনেবুর গাছে!
একেই নাকি প্রগতি কয় এই নাকি উন্নতি,
কম্পুটার আর মোবাইল  ছাড়া আজকে তো নাই গতি।।
সংকৃতির ক্যাঁথায় আগুন খাবো কি তাই ধুয়ে,
থাকলে টাকা সংকৃতি আপনি আসবে ধেয়ে।।
নববর্ষ – বিজয়াতে হয়না দেখা আর
মোবাইলেতে পাঠায় সবাই প্রভাতী নমস্কার।।
হাকুম মাকুম ঝিংড়ি পোঁ পোঁ জাদুকরের মেলা।
বুঝলে এবার এ সব হলো ভানুমতির খেলা।।