শ্রদ্ধেয় কবিবর গোপাল চন্দ্র সরকার মহাশয়ের ‘করুণাময়ী মা’ লেখনি পাঠ করে মন্তব্য লিখতে গিয়ে আমার এ লেখনির প্রকাশ।


আমার কাছে করুণ স্বরে- যাচিস অর্থ-কড়ি
দিয়েছি তোদের অন্ন-বস্ত্র- দিয়েছিতো ঘরবাড়ী।
দিতে দিতে সবই দিলাম- চক্ষু শক্তি মেধা
তবু কেন? চাইছিস তোরা- দাওনা মোরে আরও।


বলিসনাতো করুণাময়ী- কেমনে আছো তুমি?
সুস্থ্য দেহ সরল মন- রাখিও ফুরফুরি।
কত কিছুই দিলাম তোদের- দশটি হাত তুলে
শ্বশুরবাড়ী পাঠাতে তোরা- দিলি জলে ফেলে।


পুজোর চারটি দিন তোরা- চরণে ফেলিস ফুল
ভক্তি ভরে প্রণাম করিস- রাত্রে শুইয়ে দিস।
সারাটাদিন দুগ্গা দুগ্গা দুগ্গতি নাশিনি-
রক্ষা করিও তুমি মোরে- মর্তলোকে আসি।
চরণামৃত গ্রহন করে- উপোশ ভাঙ্গিস তোরা
ফল-মূল গ্রহণ করে- মস্তক নোয়াস না।


চারটি দিন অতিব যত্নে- রাখিস কোলে তুলে
পাঁচের দিনে সন্ধ্যা হলে- ভাঙ্গিস কেমনে?
পাড়িয়ে-পুড়িয়ে ভেঙে-চূড়ে- দলা করিস মোরে
নাচিয়ে নাচিয়ে ফেলিস তোরা- আঁছাড় মেরে জলে।
আমার কি আর ব্যাথা নেই? তোদের শুধুই আছে-
তবে কেন এমন করে- ফেলিস তুলে তুলে।
দিলাম তোদের অনেক সাহস- দিলাম মগজটি
তবু কেন হয়না তোদের- একটু সু-বুদ্ধি।


আমাকে নয় মানুষকে তুই- সেবা করে যা
করলে প্রেম, জীবের তরে- পূর্ণ হবে বন্দনা।
ধর্ম পালন করবি আগে- কর্ম ঠিক হবে
মানুষকে প্রেম বিলিয়ে দিলেই- ধার্মিক লোকে বলে।


কর্মে পাবি সুখটি যখন- আমায় করবি স্মরণ
ঠিক কর্মে তুষ্ট হবো- সুখি হবি তখন।


সংসার ধর্ম বড় ধর্ম- তোর মাতায়! মহামায়া
মায়ের চরণে নিত্যদিনে- করবি বন্দনা।
তুষ্ট হলে- মা তোর, তুষ্ট হবো আমি-
পেয়ে যাবি কর্মের ফল- সাথে সাথে তুই’ই।


সারাটাদিন করবি চুরি- রাত্রে হরি হরি
সকাল হলেই ভুলে গিয়ে- করিস পুকুর চুরি।
ভয় থাকেনা ডর থাকেনা- দিনের বেলাতে
রাতটি হলে মনে পড়ে- একদিন! যেতে হবে পরপাড়ে।


সুখের সময় পড়েনা মনে- দুঃখের সময় ডাকিস
দুঃখের দিনে করবো কি আর- তোর উপকার আমি?
তুই হাদারাম মরগে যা, আমার তাতে- কি যায় আসে
আমি তোকে বলছি আজ- স্মরণ করবি দিনেওরাতে।
ফলের আশায় দিন-রাত্রি ডাকিস তুই মোরে-
মনটি তোদের ভালো হলে- ফলটি পাবি পরে।


পাপ খুইয়ে পূর্ণ করে- হৃদয় দিয়ে ডাকবি যখন
আবির্ভাবে মর্তলোকে- দেখবি চেয়ে ঠিকই তখন।


চেয়ে নিবি সু-বুদ্ধি- দাওনা মগজ তটে
ফলের আশা করলে তুই- হারাবি আমাকে।


(সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭)
রাত্র- ০৮:৪০ ঘটিকা