অসীম যাতনায় আঁধার ঘেরা,তার জগৎখানি গভীর কালো মেঘের বাঁকা ধনু
তে টুটে যাওয়া অন্তরের তমোগহ্বর ।


বসুমতির তাকিয়ে থাকে নির্নিমেষে রুপা।কবে অবসান হবে সকল দুঃখের ।
বিহব্বল চিত্তে রুপা মাকে হারিয়ে মাথার উপর শেষ আশ্রয় টুকু আর আজ নেই।
ভালোমন্দয় বিকীর্ণ দীর্ঘপথ ছোট এই ভাই বোনদের দিয়ে কি করে হাঁটবে সে,
সব চিন্তার রেখা মশগুল।তার উপর পাড়ার বাজে ছেলেদের অধৈর্যতিক অশ্লীল
আচরণ চেতনার নিবিড়তায় ক্ষণে ক্ষণে তোলপাড় করছে।
ছোট ভাইটির আকুল আকুতি "ও দিদি ভাত দে,ও দিদি ভাত দে"
"ক্ষুধায় মরে যাচ্ছি তো" ......।।
রুপা সইতে পারছে না,সান্তনার বানী শুনিয়ে দৌঁড়ে গিয়ে পাশের ঘরের দরজা
চাপড়ালো।দরজা খুলে দিলে,দেখলো এলাকার মোড়ল,অশ্লীল নাঙ্গা বেসে দাঁড়িয়ে
বেহাইয়া হাসিতে হাসছে।রুপা মনে মনে ভাবলো মোড়ল এত রাত্রিতে এখানে কেন?
ছিঃছিঃএকটা কুলিন গৃহধর্মচারিণী ব্রাহ্মণ বউ এর ঘরে পরপুরুষ !!
ঈর্ষায় স্থান ত্যাগ করতে উদ্যত,অমনি মোড়ল হাত টা চেপে ধরে রুপা ছিটকে
ছাড়িয়ে নিলো হাত টা।আর মনে মনে বললো আর নয় এই পাড়ায়.........।।
বসন্তের শুক্ল সন্ধ্যাবেলা শীতেলা সাঁঝে চার ভাই বোন ট্রেনে চেপে বসেছে।পাড়ি
জমিয়েছে,অচেনা শহরের বাহুন্ডালে।রুপা নিজেই জানে না নিয়তি তাদের কোথায়
নিয়ে দাঁড় করায়।অদৃশ্য স্বপ্নের সমাচ্ছন্ন ভূবন,স্পর্শ কাতর উদয়স্ত রাত্রি দিনে যেন
তাদের সাথে খেলার ছলে খেলা করছে।উৎকর্ণ উৎকণ্ঠায় অস্থির ক্ষণ রুপার
আঁখিপাতে হণ হণ করে তো বেড়িয়ে এলো কিন্তু এখন ? তিন তিন টি নব্যযৌবনা
ললনা, অসীম রূপের চক্ষুশুল পুরুষ শাসিত সমাজে।ভয়ে আতংকিত রূপা।
ট্রেন ছুটছে তো ছূটছে,প্রচন্ড শীত, অথচ রুপার মনের অস্তিত্বে উন্মোচিত,চিন্তার
ঝড়,অবশ হচ্ছে যেন দিগ্বিজয়ীর হাড়। চিন্তার ঘুর্ণিত চাবুক যেন  নিশ্চিহ্ন হচ্ছে
তার গর্বোদ্ধত বুকে।


রচনা
২৮।১২।২০১৩


প্রিয় সাহিত্য প্রেমী,কবিতা প্রেমী পাঠক/ পাঠিকা এবং সম্মানীত  কবি গণ আমি
এই "কন্যাকুমারী" গদ্য কবিতা টি কয়েক টা সিরিজে সাজাতে যাচ্ছি, তবে এইটা
কোন কল্পনার কবিতা নয়,একেবারে বাস্তবতায় ভরা। আমি শুধু আমার ভাষায়
তুলে আনার চেষ্টা করছি মাত্র । কেমন লাগলো জানালে খুশি হবো।