পরিবারের সকল কারুকাজ যেন রুপার হাতেই মানায়।
সময় এবং স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না।ছোট বোন গুলো কে গ্রেজুয়েশান
কমপ্লিট করিয়েছে।ছোট ভাই টি মেট্রিক পাশ করে কলেজে পড়ছে।রুপা জীবনের
কত গুলো বছর কাটিয়ে দিলো জীবন সংগ্রামে তা যেন টের ও পেলো না।অমলেশ
বাবু প্রায় বলতেন "ওরে মা এবার তো সময় হলো বিয়ে টা করে নে।দিন গুলো যে
পার হয়ে যাচ্ছেরে মা।সঠিক সময়ে সব কিছু করে নেওয়া  ভালো রে মা"।রুপা
বরাবরই না" করে দিয়েছে,ছোট ছোট ভাই বোন দের দিকে তাকিয়ে।জীবনে নিজে
কে নিয়ে ভাবার ঠিক একটা সময় হয়ে উঠেনি তার।তার একটাই লক্ষ্য ছোট বোন
দের বিয়ে দিবে,ভাইটাকে মানুষের মত মানুষ করবে,বড় দু'ই ভাই কে আবার ফিরে
পাবে এই আশা বুকে বেঁধে আছে।
সাঁঝে সূর্যি মামা সিঁদুর মেখে নিত্যি  রঙের খেলা খেলে পাটে চলে যাচ্ছে,কিন্তু মৌ এর এখনো ঘরে ফেরার নাম নেই ।বিষণ্ণ চিত্তে রুপা অস্থির।বারেন্দায় এদিক ওদিক পায়চারি করছে।অমলেশ বাবু বিষয় টা লক্ষ্য করলেন ।রুপা কে স্বান্তনা দিয়ে
ঘরের ভিতরে চলে গেলেন ।চঞ্চলা মৌ বড়ই চঞ্চল।সাথে এক সুঠাম দেহের যুবক কে নিয়ে হাজির।
রুপা আগুন্তুক যুবক কে দেখে চমকে উঠিলো।এই যুবক টি ই একদিন তার সাথে অশ্লীল আচরণ করেছিলো। তা মনে পড়তেই রুপা যুবক কে কঠিন কঠিন ভাষা দিয়ে
ঘর থেকে বের করে দিতে যাচ্ছিলো,কিন্তু মৌ তাতে বাঁধ সাধে।ভালোবাসার টানে
টানে মৌ দিদির সাথে ঝগড়ায় মেতে যুবকের হাত ধরে বেড়িয়ে উধাও।
রুপার অরুণবরণ অম্বরখানি নির্মম আঘাতে ফ্যাকাশে হয়ে গেলো।উজ্জ্বিবিত মন জীর্ণতার কষাঘাতে খান খান!!ছারখার হয়ে গেলো মনের ভিতর লুকানো
সব স্বপ্ন ,ধ্বংস হয়ে গেলো মনের দীপ্ত-অরুণ-বসনা। কত কষ্টে গড়া সোনার প্রতিমা
আজ বুঝি সামান্যা সুখের আশায় অতীত ভুলে যাতনায় ভাসিয়ে গেলো লহরের দুঃখের সাগরের ত্রাসে।


রচনা
৩১।১২।২০১৩
প্রিয় সাহিত্য প্রেমী,কবিতা প্রেমী পাঠক/ পাঠিকা এবং সম্মানীত  কবি গণ আমি
এই "কন্যাকুমারী" গদ্য কবিতা টি কয়েক টা সিরিজে সাজাতে যাচ্ছি, তবে এটা
কোন কল্পনার কবিতা নয়,একেবারে বাস্তবতায় ভরা। আমি শুধু আমার ভাষায়
তুলে আনার চেষ্টা করছি মাত্র । কেমন লাগলো জানালে খুশি হবো।