চিন্তার কলতানে উত্তাল মেঘে মেঘে ভাসা গুচ্ছ জলরাশি আজ যেন কিছু টা
স্থবির হতে লাগলো ।


প্রাতে পূর্ব-উদয়শিখরে সূর্য যেমন আলোর ছটা মেরে হাসে তেমনি আজ
রুপার মনে ও ঢেউ খেলে যাচ্ছে।কিছু টা স্বস্থির নিশ্বাস যেন তার অস্থির মনে।
সুহৃদ্‌-রূপে নির্ভর বন্ধন কেবল বিশ্বাসে-ই হয়,রুপা যেন এই ভদ্র লোক
অমলেষ বাবু কে সে রকম গভীর বিশ্বাস করে তাঁর পিছু ধরলো চার ভাইবোন।
অমলেষ বাবু বিবাহিত জীবনের ষোল বছর পার করে গেলো।কিন্তু পরিতাপের
বিষয় হলে ও সত্য তিনি এখনো বাবা ডাক শুনতে পারেন নি।এই নিয়ে তাঁর
স্ত্রী প্রত্যহ নীরবে কাঁদেন।আজ এদের পেয়ে তিনি যেন আসমান ভরা তারা
পেলেন। রুপার মুখে তাদের অতীত শুনে স্বান্তনা দিলেন নানান বাক্যে,ভরসা
দিলেন নতুন জীবন সাজানোর।হৃদয়দুর্গে সজীব চেতনা রুপার।
গর্ভধারিনী নয় বটে,তবু ও কত আহল্লাদ,জন্মদাতা নয় বটে তবু ও স্নেহবিগলিত
চিত্তে উচ্ছ্বসিয়া উঠায় অন্তরে তার সীমানাহীন।
মৌ,এবং সেঝো বোন নিপা কে বিদ্যালয়েএডমিট করে দিয়েছেন অমলেষ বাবু।
তা দেখে অশ্রুমুখী জল রুপার আঁখি থেকে গড়িয়ে পড়লো।যে আশা বুকে আঁকড়ে ধরে স্বপ্ন বুনছিলো রুপার আজ সে আসা সত্যি হতে চলেছে ,ছোট ভাই
বোনদের সে মানুষ করবে,লেখা-পড়া শিখিয়ে।
অমলেষ বাবুর শত আপেত্তি থাকা সত্ত্বে ও রুপা বাবার কাজে সাহায্য করে
যাচ্ছে।বাবার লেখা নানান তথ্য সে টাইপিং করে দিচ্ছে,পত্রিকার বিভিন্ন কলামে
নিজেই কাব্যকথা লিখছে,সাহিত্যের বাতাস নিজের গায়ে বুলাচ্ছে,তাতে উপরি
কিছু বাড়তি টাকা ও আয় হচ্ছে।অমলেষ বাবু সে টাকা আলাদা করে সঞ্চিত করে রাখছে গোপনে ।
রান্নার কাজে মাকে সে মোটেই দিতে রাজি নয় রুপা।ভোর ছয়টার মাঝে সবার
নাস্তা টেবিলে চলে আসে,ভাই-বোনদের টিফিন বক্সে টিফিন ভরে দেই,স্নানঘরে
মায়ের জন্য গরম জল,কাপড় ছোপড় ধোয়া, পরিবারের সকল কারুকাজ যেন
রুপার হাতেই মানায়।


রচনা
৩০।১২।২০১৩


প্রিয় সাহিত্য প্রেমী,কবিতা প্রেমী পাঠক/ পাঠিকা এবং সম্মানীত  কবি গণ আমি
এই "কন্যাকুমারী" গদ্য কবিতা টি কয়েক টা সিরিজে সাজাতে যাচ্ছি, তবে এটা
কোন কল্পনার কবিতা নয়,একেবারে বাস্তবতায় ভরা। আমি শুধু আমার ভাষায়
তুলে আনার চেষ্টা করছি মাত্র । কেমন লাগলো জানালে খুশি হবো।