[The Stranger by Albert Camus অবলম্বনে। অনার্স এবং মাস্টার্সে এই উপন্যাসটি ছিল আমাদের। আমি নিজেও অবাকবনে গিয়েছিলাম এই উপন্যাসের মূল চরিত্রের বৈশিষ্ট্য দেখে।]                        


            “ফাঁসির মঞ্চে খেয়ালী মানব”


সমাজ ; মানবজীবনের আশ্রয়স্থল আর নিয়ন্ত্রক।
সমাজ ; সম্পর্কের বৈধতা আর অবৈধতা দেয় ঠিক করে।
সমাজ ; নারী আর পুরুষের কর্তব্য করে দেয় নির্ধারণ।
সমাজ ; মানব হৃদয়ের অনুভূতিকেও আনতে চায় নিজের মুঠোয়।
কখন কাঁদতে হবে-কখন হাসতে হবে তাও নির্ধারণ করে দেয় সমাজ।
সমাজের বিরুদ্ধে কিছু করলেই হতে হয় সমাজচ্যুত।
মধ্যবয়স্ক একটি ছেলে-
নামটি তার মৃত্যুঞ্জয়; বড্ড খেয়ালী মানব সে।
হৃদয় তার কঠোর নাকি লোক দেখানো অনুভূতি-
প্রকাশে ঘোর আপত্তি যায়না কিছুই বোঝা।
মা তার কবে গিয়েছে মারা জানেনা সে- গিয়েছে দেখতে তবু আঁখিতে নেই অশ্রজল।
মার কফিনের সামনে দাঁড়িয়ে ইচ্ছে করছিল কফি আর সিগারেট খেতে।
মায়ের যেদিন শেষকৃত্য হয় সেইদিন আকাশে ছিল সূর্যের দাবদাহ।
সেই দিনেই সে গিয়েছে সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে।
সৃষ্টিকর্তার প্রতি ছিল না তার বিশ্বাস এমনকি ভালবাসাতেও!
শারীরিক সুখ তার কাছে ছিল বিয়ের বন্ধনের চেয়ে বেশি দামি।
কোন এক কারণে মেরে ফেলেছিল একটি লোককে আর সেই মৃত ব্যক্তির-
নিথর দেহে চালিয়েছে চারটি গুলি।
আদালতে যাবার মুহূর্তে উকিল বলেছে,
“পাপ স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে সৃষ্টিকর্তার কাছে”।
উত্তর ছিল তার “মৃত্যুর পর যদি জানতে পারেন সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেই”।
আদালতে তার অপরাধের চেয়ে মুখ্য বিষয় ছিল-
“কেন কাঁদেনি মা যেদিন গিয়েছে মারা”?
উত্তর ছিল “ইচ্ছে করেনি তাই কাঁদিনি”!
এমন খেয়ালী অনুভূতি নিয়ে খেয়ালী মানব ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়ালো।
শেষ দুটি ইচ্ছে ছিল তার-
প্রথমত প্রতিটি মানব যেন আপন অনুভূতির নিয়ন্ত্রক হয়।
আর পরিশেষে-
খেয়ালী মানবের ফাঁসি দেখে যেন আমজনতা !