মামা,কটা বাজে? একটু বলবেন দয়া করে।
চোখে মুখে বিরক্তি এনে নিঃশব্দে চলে গেল লোকটি।
নিক্ষিপ্ত ধাতব খণ্ডের মত একটি বাক্য সহসা
ধেয়ে এসে বাকরুদ্ধ করে দিয়ে গেল আমায় -
“আমি কি রিকশাচালক যে আমাকে মামা ডাকলেন!”
নিজেকে বড় বেশী অপরাধী মনে হল তখন,
ভেতরের অন্তরাত্মা ধিক্কার দিয়ে জবাব চাইল-
“কেন আমি আংকেল ডাকি নি?’’
বিজ্ঞাপনফলকগুলো ভেঙচি কেটে বলল- খ্যাত কোথাকার!
পিচঢালা রাজপথ আমার ভার বইতে অক্ষমতা জানাল।
উড়াল সেতু যেন মাথায় ভেঙ্গে পড়তে চাইল।
বাস কারগুলোকে মনে হল এক একটা বর্শা হাতে ছুটে আসছে
আমার পাপের প্রায়শ্চিত্ত দিতে।
সারি সারি দোকান আমার অপমানে মুখ টিপে টিপে হাসছিল।
সহস্র ইমারত চিৎকার করে কি যেন বলছিল !
ভাল করে কান পেতে শুনি তারা বলছে-
মামা-চাচা, পিসা- মেসোর যুগ শেষ
ও নামে ডাকলে ভদ্রলোক চাষা হয়ে যায়।
চাচী –মামী, পিসি – মাসি আর নয়
এ ডাকগুলো শুধু কাজের বুয়াদের জন্য সংরক্ষিত।
এখন আংকেল- অ্যান্টির যুগ
মম –পাপার যুগ।


ওইদিন আমি হেসেছিলাম প্রাণখুলে ,
বিশেষ্যের প্রতিস্থাপনে নিজের অপারগতার অপমান সয়ে।
বিশেষণ –সর্বনাম ক্রিয়া একসঙ্গে হেসেছিল সেদিন।
বেশ তো প্রতিস্থাপিত হও বদলে ফেল আপন শেকড়।
গাঁয়ের গন্ধ –মুখের ভাষা বদলে ফেল প্রতিস্থাপিত কর।
আমি রিকশা ডাকি আর প্রার্থনা করি-
বেঁচে থাক রিকশা – ‘মা’ এর দ্বিত্ব দ্যোতনা
মামা নামের চিরধারক হয়ে বেঁচে থাক রিকশাওয়ালা।
2Like · · Share