এই পৃথিবীতে মানুষের কঠিনতম অসুখ কি জানো?
কি?
ভালোবাসা।
এই অসুখের কোনো ওষুধ নেই, কোনো বিকল্প নেই।
যা আছে তা কেবল পাগলামি, অসহায়তা, দুর্বলতা।
জানো আজও  তোমার সাথে দেখা হলে মনের অসুখ দ্বিগুন বাড়ে, শ্বাসকষ্ট হয়, একা একা হাঁটতে পারি না --
একটা তুমি নামক হাত খোঁজে।
বৃষ্টি যেমন শীত বাড়ায়, ঝড় যেমন গাছ ভাঙ্গে, বজ্রবিদ্যুৎ যেমন আছড়ে পড়ে মাটির বুকে, ঠিক তেমনি তুমি নামের অসুখ মারণব্যাধি ভাইরাসের মতো মন থেকে ছড়িয়ে যায় শরীরের শিরা থেকে উপশিরা।
জানি আমাদের বিচ্ছেদের বয়স অনেক।
জানি হঠাৎ কোনো ব্যস্ত ট্রামে দেখা হলে আমাকে চিনতে পারবে না। তবুও যদি একবার মিথ্যে করে আমার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে যাও 'ভালোবাসি 'তাহলে আমার অসুখ সেরে যায়।
মনে হয় বছরের এই শেষ কয়েকটা দিন তোমার সাথে নির্জন টুরে যায়, সেখানকার অচেনা মানুষেরা আমাদের দেখে বলুক -'পারফেক্ট কাপল '।
তুমি ছেড়ে যাওয়ার পড়ে আমার ঘরুয়া লাইব্রেরি থেকে যত প্রেমের বই আছে সব পুড়িয়ে দিয়েছি -স্নানঘরে বাথটবে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা কেঁদেছি। তোমার প্রয়োজন থেকে প্রিয়জন হতে পারিনি কখনো। কাল সারারাত আমি ঘুমাতে পারিনি। কি ভাবছো --ফ্রাস্ট্রেশন, না না অভিমান।
যদিও এই অভিমান, এই অসুখ, এই কুড়ি টাকায় চারটে কমলালেবু দেওয়া হকার, অন্ধ ভিখারির দিনযাপন, সব সেরে যায় যদি তুমি হাত বাড়াও।
বিশ্বাস করো অভিক তোমার সুভদ্রা থেকে আর তিতাস হতে পারিনি। কেউ কেউ বলছে আজ ক্রিসমাস, আজ সূর্য ডুবতে দেরি হবে --তোমার পছন্দের হোম রেসিপি, প্যাস্ট্রি কেক বানিয়েছি। জানি তুমি আসবে না, জানি তোমার ভুলে যাওয়ার অভ্যাস।
একদিন তোমাকে পেয়ে মনে হত গোটা পৃথিবীকে পেয়ে গেছি। কি অহংকার আমার -কাউকে পরোয়া করছি না, মাঝরাতে ঘুমোচ্ছি না, কফিশপে আড্ডা দিচ্ছি, সামনে ছেলেমেয়েদের মুখে ব্রেকাপ শব্দ শুনলে হাসি পাচ্ছে।
আজ আর কোনো অহংকার নেই, আজ কফিশপে যাওয়া নেই, ব্রেকাপ শব্দ শুনে হাসি পাইনা, কেবল বোবা গাছের মতো স্তব্ধ হয়ে যায়।
আচ্ছা তোমরাই বলো --
ব্রেকাপ বললেই সব শেষ হয়ে যায়?
অসুখ সেরে যায়?
অভিমান মরে যায়?
স্নানঘরে কিংবা খাওয়ার সময় ভুলে থাকা যায়?