আমরা খুব গরিব, অনাহারে দিন কাটে, মানে যাকে বলে ছোটোলোক
একটুকরো রুটির জন্য কি না করি..
পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ,
এমনকি নিজের শরীরটাও বেঁচে দিই বেশ্যালয়ে
বাড়ির মালিকেরাও কুকুরের মতো শুকতে থাকে, চাটতে থাকে, খেতে থাকে
নারীমাংস বড় প্রিয় ওদের


আমাদের আবার ইজ্জ্ত, আমাদের আবার সন্মান
আমাদের মতো অনাহারে থাকলে বুঝবেন
কোথায় থাকে মানসন্মান..


বাড়ি ফেরার পথে ছেড়া শাড়িটা আরো ছিঁড়ে যায়
আমার ছেলেটা গরুর বাচ্ছার মতো মুখ তুলে এক দৃষ্টিতে চেয়ে প্রশ্ন করে --মা তোমার শাড়িটা ছিঁড়ে গেছে, আর কতদিন এই পুরোনো শাড়িটা পরে থাকবে, নতুন শাড়ি পড়ো না কেন?


এর উত্তর নেই আমার কাছে


আমার ভাতার টা বোবা আর পঙ্গু গাছের মতো দাড়িয়ে থাকে, ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে
ওই পাড়ার ভদ্দোলোকের ছেলেরা সব ইস্কুলে পড়ে.. ওই কি যেন বলে হ্যাঁ. মনে পড়েছে.. ইংলিশ মিডিয়ামে


আমাদের বুবুনটা রাস্তায় দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখে..
আমার মরদ টা কে বলে --বাবা আমাকেও ইস্কুলে ভর্তি করবে না?
আমিও কি ওদের মতো ভালো ভালো জামা প্যান্ট পরতে পারবো না?


আমার মরদ টা শুনে কেঁদে ভাসায়
আমার ছেড়া ময়লা শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখ মুছিয়ে দিই
আর আমার যত পাপ যত নোংরা সব ধুয়ে যায়


ওই পাচঁ বছরের শিশু টাও সব বুঝে গেছে
সে আর ইস্কুলে যাবো বলে বায়না করে না
নতুন নতুন জামাকাপড়ের জন্য খোট করে না আর


আমরা ছোটোলোক, আমরা গরিব
আমাদের কোনো আশা করতে নেই
ইচ্ছে থাকতে নেই


আমরা ওই বাবুদের মতো স্যান্ডউইচ খায় না, পাউ রুটিতে মাখন লাগায় না
আমরা পোড়া একটুকরো রুটিতেই খুশি


এই তো সেদিন ওই পাড়ার মানিক বাবুর বাড়িতে টি ভি চলছিল
আমি একমুহূর্ত বসে দেখেছিলাম
বাবু সেই সুযোগে আমার শরীরের স্বাদ নিলো
বললো --কাউকে বলবি না..
তোকে রঙিন টি ভি কিনে দেবো


আসলে আমাদের জীবনে রঙের বড়ো অভাব
আমরা গরিব বাবু আমরা ছোটোলোক..।


----------------------------------------
5/1/2020(২১পৌষ ১৪২৭)