নিঃসঙ্গ দুপুর,
অফিস যাওয়ার পথে হঠাৎ দেখা তার সাথে
আমি চমকে গেলাম
বুকের বামদিকটা ঘড়ির সেকেন্ডের কাটার মতো দ্রুত গতিতে বেড়ে গেলো
আমি তাকালাম সেই উনিশ বছরের মেয়েটির দিকে
আমি তাকালাম তার হরিণী চোখের দিকে
উনিশ বছরের ঠোঁটের দিকে
আমি তাকালাম তার নাকে ফুটে ওঠা বিন্দু বিন্দু ঘামের দিকে


স্কুলে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে আমার সাথে দেখা করতে আসা আধ পাগলী মেয়েটা আজ অন্য কারো প্রেমিকা, অন্য কারো প্রেম, অন্য কারো ঘর


চোখে সাদা চশমা, পরনে আমার প্রিয় নীল রং শাড়ি আর হাতে সোনাটা ব্রান্ডের ঘড়ি
আজও তার চোখে ফুটে উঠেছে ঊনিশের সেই আবেগ, সেই চাহনি সেই প্রেম
সে হাতে করে তার শাড়ির আঁচলের একটা খুট ধরে আমার দিকে তাকিয়ে বললো --কেমন আছো?
মিনিট পাঁচেক চুপ, আমি তার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি
এমন সময় সে আমার দিকে অঙ্ক স্যারের মতো  ছুড়ে দিলো আর একটা প্রশ্ন ---বিয়ে করেছো?
হিসেব মেলাতে পারিনি.. সব ওলটপালট হয়ে গেছে
আবার মিনিট দুয়েক চুপ
কি বলবো তাই ভাবছি


আসলে এতো কিছু বলার আছে যে বলতেই পারছি না


আমার চোখদুটো নীরবে ভেসে গেলো
একবার তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে ইচ্ছে করছে
তার কানের পাশে চুল সরিয়ে ভালোবাসি ভালোবাসি বলে চিৎকার করতে ইচ্ছে করছে


সব চিৎকার নীরবে গিলে নিচ্ছি
বলতে ইচ্ছে করছে-
কতদিন তোমার হাতে হাত রেখে হাঁটিনি
কতদিন তোমার কোলে মাথা রেখে স্বপ্ন সাজায়নি
কতদিন তোমার খোলা চুলের সুবাস নিয়ে কবিতা বলিনি
কতদিন তোমার ঠোঁটের স্পর্শে বুকে জমে থাকা মেঘ সরিয়ে রোদ দেখিনি
এসবই বিন্দুবিসর্গ ভাবতে ভাবতে হঠাৎ কানে এলো আর এক প্রশ্ন --.
কি হলো আমার সাথে কথা বলবে না?
আমার চোখদুটো ভারি হয়ে গেলো
আমি তার দিকে  একটা কাব্যগ্রন্থ এগিয়ে দিলাম
তাতে লেখা ---"ফিরে আশার ঠিকানা "
লেখক --ওমুক...


সে অবাক হলো
সে হয়তো এবার সব বুঝে গেছে
তার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর,
আমাদের ঊনিশের
                            
         প্রেম
                রাগ
                   অভিমান
                          ভালোবাসা  
                                           সব সব......


                                


আমি রুমাল দিয়ে আমার জলে ভরা চোখদুটো মুছতে মুছতে তাকে পাশ কাটিয়ে চলে এলাম


তারপর....
তারপর আর জানি না....
----------------------------------------
13/1/2020