সমুদ্রের অফুরন্ত জলের স্বচ্ছতায়
সাদা চকচকে আরশির বুকে
দ্বি-প্রহরে সূর্যের রক্তিম আভায়
ক্লান্ত পথিকের সঘাম শরীরে
দূর গাঁয়ে মেঠোপথের বাঁকে
আমি দেখেছি তোমায়........


সোনালি ফসল ক্ষেতের আলে
রাখালের মধুর বাঁশি সুরে
রূপবতী প্রজাপতির রঙিন পাখনায়
রসবতী রসালো ফলের গায়
পথের ধারে বেড়ে ওঠা বটের ছায়ায়
আমি দেখেছি তোমায়........


তোমার রূপের ছটায়
ঝলমলে জেগে ওঠা দিগন্ত প্রান্তরে
হাজার বছর চুপ থাকা এ বঙ্গভূমিতে
পণ্ডিত মশাইয়ের চশমার ফ্রেমে
জ্বলে ওঠা স্বরবর্ণ- ব্যঞ্জনবর্ণের আলপনায়
আমি দেখেছি তোমায়........


তোমার তেজোদীপ্ত উচ্চারণে
জেগে ওঠা শুষ্ক মরা নদীর বুকে
খাঁ-খাঁ রোদ্দুরে পোড়া মাঠে
ভোরের শিশিরে; দখিনা বায়ুতে
রুক্ষ প্রকৃতির শরীরে
আমি দেখেছি তোমায়.......


গায়কের কণ্ঠে; চাষির লাঙ্গলের ফালে
দুরন্ত ছুটে চলা কবির হাতের কলমে
শিল্পীর মনোলোভা রঙতুলির আঁচড়ে
কোমলমতি শিশুদের স্বপ্নময় মন-প্রাণ জুড়ে
পাঠ্য বইয়ের প্রতিটি পাতায়
আমি দেখেছি তোমায়....


প্রতিটি জীবনের মুক্তি বার্তায়
ভুখা-নাঙ্গার খাবারের প্লেটে
নেতার উচ্চ কণ্ঠে ভাষণে
চোখের কার্নিশে লালিত স্বপ্নে
এ জমিনের প্রতিটি ধূলি কণায়
আমি দেখেছি তোমায়.......


রিক্সাওয়ালার দু'প্যাডেলে
শিল্পপতির সদ্য আমদানি মেশিনের চাকায়
ডাকপিয়নের থলের ভিতর
ডাস্টবিনে ফেলে রাখা নবজাতকের কান্নায়
এমন কি, প্রিয়তমার চোখের পাতায়
আমি দেখেছি তোমায়...


স্বাধীনতা, সত্যই কি দেখেছি তোমায়  ?