ঝর্ণা নামের মেয়েটি নদী হতে চেয়েছিল।
চলার পথে সহস্র বিঘ্ন-বাধা তুচ্ছ করে, চঞ্চলা হরিণীর মতো তিরতির বেগে ছুটে চলেছিল সদ্য যৌবনা মেয়েটি।
নদী হতে চেয়েছিল সে। নদী হয়েই তার জীবনে পূর্ণ স্বাধীনতার সুখ আস্বাদন করতে চেয়েছিল।


কিন্তু গ্রীষ্মের প্রখর রৌদ্র তাকে প্রতিদিন কুপ্রস্তাব দিয়ে যায়!
বারংবার কুপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ঝর্ণা নামের সেই আত্মাভিমানী মেয়ে।
প্রতিশোধের জ্বালা মেটাতে শেষে মেয়েটির গায়ে আগুন ঢালল তেজী অহংকারী রৌদ্র পুরুষ!!


আগুনে ঝলসানো মৃতপ্রায় নদী মেঘ হয়েই আকাশের বুকে খুঁজে পেতে চেয়েছিল নিরাপদ আশ্রয়!
কিন্তু সেখানেও বজ্র নামের দুর্বৃত্তের বাস!
বজ্রের বলপূর্বক আলিঙ্গন থেকে নিজেকে কোনোমতে মুক্ত করে, পৃথিবীর বুকে মরণ-ঝাঁপ দিল সেই অভাগীনি!


অথচ ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! মরতে চেয়েও মরণ হলো না তার!
অগত্যা মাটিকেই আঁকড়ে বাঁচতে চেয়েছিল সে।
কিন্তু যে মেয়ের প্রতি দুশ্চরিত্র পুরুষ কুদৃষ্টির কালিমা লেপন করে, তাকে যে মাটির
পৃথিবীও ভালোবেসে আপন করে নেয় না! কলঙ্কিনী--কুলটা--চরিত্রহীনা অপবাদে একঘরে করা হলো তাকে!
লজ্জায়--অপমানে-- আর চরম হতাশায় অবশেষে ধরিত্রীর বুকেই সমাধিস্থ হলো ঝর্ণা নামের সেই মেয়েটি!
--------------------------------------
✍️সুলেখা রায়।(কলকাতা)