(কবি কাজী নজরুল-কে স্মরণে রেখে)


আমি বৈরী হাওয়া, যা খুশি আমি তাই করে যাই
ছন্দ হারা বাঁধন ছেড়া, উড়ে এসে জুড়ে বসি তাই।
পাণ্ডলিপির গল্প কবিতা গানে ,নৃত্য করি মন হরষে
ছলাত ছলাত নদীর ঢেউ ছুটে চলি আপনা ত্রাসে।


আমি চপল চপলা ছন্দ দোলা মন ভোলানো  তন্বী
কচি কচি সবুজ ধানের ক্ষেতে ঢেউ তোলানো বর্ণি।
আমি মাঠের রাখাল, বাঁশের বাঁশির মন ভোলা এক সুর
আমি কপোত-কপোতীর সুপ্ত তনু, হৃদয় অচিনপুর।


প্রেমের পর্বে প্রেমের গর্বে শব্দমালা যাই রচে
কাব্য সাজাই ছন্দ লয়ে সকল দুঃখ যায় ঘুচে।
আমি লিখি আনমনে প্রেম-বিরহ দহন কথা
এঁকে যাই আঁখিনিরে বুকের নিশ্চুপ নীরবতা।


হৃদয়ে আমি পাহাড় গড়ি রূপক ছন্দ  অলংকারে
রূপ রস সুধা গন্ধে ভরে কাব্য যাচি  বারে বারে।
নিলাঞ্জন  চাঁদ পূর্ণিমা কথা ইচ্ছে যত লিখে চলি
আমি হৃদয়ে হৃদয় গেঁথে হৃদয়ের কথা বলি।


আমি শ্রাবণে প্লাবনে বন্যা ঢল এক অতি বৃষ্টি
আমি কাল-বৈশাখী  ঘুর্নিপাক এক অনাসৃষ্টি
বসন্ত বিলাশে নতুন যুগল নতুন প্রেমের সুখ
আমি  কুহকিনী, মায়াবিনী, মায়া হরিণী মুখ।


আমি কেতকী  নূপুর, ঝিনিক ঝিনিক শব্দশত
আমি পাহাড় গলা কান্না হাসিতে  চলি  অবিরত।
আমি বন - বনানীর সবুজে আঁকা একটি ছবি
আমি ছন্দ ছেড়া হৃদয় কাড়া এক প্রেমের কবি।


আমি গঙ্গা রূপী, স্রোতস্বিনী কবিতায় আমার
আমি স্থান পেয়েছে স্ব-মহিমায় মানব হৃদে বারংবার ।
শাসন শোষণ বঞ্চনায় আমি শিকল ভাঙার গান
মুষ্টিবদ্ধ দৃঢ প্রজ্ঞায় করি প্রতিবাদ, হাতে নিয়ে  প্রাণ।


আমি চপল চপল ছন্দ দোলা গিরিনন্দিনী পাহাড়ি ঝর্ণা
শ্রেষ্ঠ সময়ের কর্ণধার আমি সুফলা আমি সুবর্ণা।
আমার কলমে ঝরে রাজনীতিকের মুখোশ খোলার কবিতা
দুর্নিবার অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো উজ্জ্বল সবিতা।


কাব্যে আমি দোদুল দুলি বৃক্ষ লতা তরুর  শাখা
মনের চোখ সারাটিক্ষণ স্বপ্ন দেখে স্বপ্ন আঁকা।
আমি তল্লাসী, আমি উল্লাসী  আমিই সোনালি ভোর
আমি গাইতি শাবল হাতুড়িতে ভাঙি অবিচারের দোর।


আমি রংবাহারি কাব্যরসের পূর্ণ পাণ্ডুলিপি
আমি ভাঙনের সাথে লড়াই করে ভাগ্যসঁপি।
আমি নর্তকি,আমি দেহোপজীবিনী, আমিই অন্ধকার
আমার সাথে মেলাতে জুড়ি বলো সাধ্য আছ কার?
১২ সেপ্টেম্বর  ২০১৮