মানবিকা-২৩
জানো শিশির, আজকাল শব্দগুলো আর কবিতা হয়ে ওঠে না
এখন আর কোন কবিতা আমি লিখিতে পারিনা
মাঝ রাতের এক পসরা বৃষ্টি তোমার কথা ভীষণ মনে করিয়ে দিলো আজ
মনে করিয়ে দিলে সেই রেস্টুরেন্ট টেবিলে মুখামুখি তুমি আমি
কাক ভেজা এই আমি সবুজ ব্লাউজ ব্রাউন কালার শাড়িতে
তোমার অপলক চাহনি
নাস্তার প্লেট ফিরিয়ে দেওয়ায় তোমার মুখে অভিমানী  হাত
তোমার প্লেটের পরাটার একটুক্র ছিড়ে  মুখে দিলাম
অমনি স্নিগ্ধ হাসি ঝিলিক
তোমার সেই হাসিমাখা মুখ......
ভোরে ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় পা রাখতেই দেখি
উঠোনের উপর বরই গাছের ডালে
দুটি বুলবুলি লুকোচুরি খেলছে।
আর লেবুর পাতার ফাকে একটি টুনটুনির টুইট টুইট টুনটুন গান
মৃদু বাতাসে পুকুররে ছোট ছোট ঢেউ
বারবার মনে করে দিচ্ছে তোমার কথা।
কানে বেজে উঠছে
শেষবার যখন তোমার সাথে দেখা হয়েছিলো
জানিনা তখন কোন খেয়ালে বলেছিলে
-কবিতা ,তোমার যা খুশি তাই করো
শুধু আমাকে নিয়ে লিখো না আমাকে নিয়ে আর ভেবনা।
-কিছুক্ষণ নীরব থেকে প্রশ্ন করেছিলাম- অশুবিধা কোথায়?
- আছে।
- আছে?
-হ্যা আছে।
- কি অশুবিধা সেটা বলবে তো?
-এখন ডিজিটাল যুগ
- তো
-না কিছু না।
দেখো শিশির, আমি রাইটার, আমার কলমে প্রেম প্রকৃতি মিলে মিশে একাকার।
তাছাড়া ওটা যে তোমাকে ঘিরে লেখা সেটাই বা বলো কি করে?
- হা হা হা, পাগলী তোমার লেখনী বলে দেয়।
-তার মানে তুমি আমাকে লিখতে মানা করছ?
- না তা করছি না,
শুধু বলছি.....
- ঠিক আছে তুমি যা চাও তাই হবে।
-আসি কবিতা।
বিদায় নিলে তুমি
তোমাকে ঘিরেই আমার কবিতারা কখনো নীল আকাশে ডানা মেলতো
কখনো সাগরে, কখনো পাহাড়ে, কখনো বা বৃষ্টির রিমঝিম গানে
কখনো শিশিরের মত নিঃশ্বব্দে কলম হতে ঝরে পড়তো কগজে।
এখন আমি আর স্বপ্ন দেখি না
আশায় বাধি না বুক
ভুলে গেছিস সেইসব সুখের দোলা..
বন্ধন-সুখ চন্দ্রনেশা শিউলিস্বপ্ন..
দেখ শুধু গভীর প্রশ্বাস-চিঠি কর্পূর ধূপে ধূপে..
প্রেমহীন গহীন বনে পুড়ে শ্বাপদ আন্ধার কূপে...
উগলে উঠে দেখত কেমন পংকিল জল বান..
মনের মাদলে শংকা ডঙ্কা, ব্যর্থ কবিগান


তবু প্রতিক্ষার প্রহর গুনি
কবে ফের তোমার বুকে রাখবো মাথা
আমার চোখের পানি আপন হাতে মুছে দিয়ে
কপালে চুমো এঁকে মাথায় আঙ্গুল বুলাতে বুলাতে বলবে
-কবিতা।
- উদাস বাউল কবির মতন..
এই বাহু ছুটে যাবে অজান্তে
শালিকের ডানায় তুলে কাঁপন..
গলিয়ে ফেলতে সেই পাহাড় অভিমান...
শরতের নীলা ক্ষণে গাইতে আবার বর্ণিলসব গান।