মানবের এই সমাজে পুরুষের মত নারীও মানুষ
তবু আজো নারী, নারীই রয়ে গেলো পেলো না মানুষ নামের অধিকার।
হে পুরুষ,  তোমরা যেমন রক্ত মাংস আর দুই'শ ছয়খানা অস্তির সমাবেশে গঠিত  তেমনি নারীও, তবু কেন তোমরা নারীকে মানুষ ভাবতে পারো না?


( নারী দিবসে সেই পাগলী মেয়েটিকে নিবেদিত এ কবিতা। যে মাত্র কিছুদিন আগে এক ফাকা মাঠে সন্তান প্রসব করে।)


হে পুরুষ শাসিত  সমাজের কাপুরুষেরা এই সুন্দর পৃথিবীর আলো-বাতাস,  ফুল-পাখি,আকাশ-বাতাস, চন্দ্র-তারা নারীই তোমাদেরকে দেখিয়েছে
এই নারীর কারণেই আজ তোমরা
এটা কেন বুঝতে চাও না।
কেন ঘরে বাহিরে নারীকে অকারণ লাঞ্চিত করো বঞ্চিত করো?
অবহেলায় কাটে নারী জীবন।
তবু তোমাদের জন্য দু'হাত তুলে আশিষ করে এই নারীই।
তোমরা সে কথা বুঝেও বুঝ না।
কিছু বোঝো আর নাই বোঝো  এটুকু নিশ্চই বোঝো
নারী ছাড়া তোমাদের জীবন অস্তিত্বহীন!
নারী ছাড়া তোমরা পেতো না প্রাণ।
নারী স্বীকার  করে তোমরাই তাকে দিয়েছ মাতৃত্বে সাধ।


নারীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে করো দিবা-রাত্রি যাপন,
যাও যুদ্ধ জয়ের মাঠ, ঘুরে ফেরো আকাশ থেকে আকাশে।
অথচ সেই নারীকেই করো হেও প্রতিপন্ন,   লালসা ভরা  চোখ ও মনে।
সদ্য ফোটা গোলাপ কলি, যে সুমিষ্ট সুবাসে সুবাসিত করে ধরণী
তাকে পথমাঝেই বিবস্ত্র করো
তার নগ্নতায় খুঁজে ফেরো অবাঞ্চিত সুখ।
একটি একটি করে তার পাপড়ি  পদদলিত করো,
তোমাদের হিংস্র তৃষ্ণা মিটাতে
পথের ধারে পড়ে থাকা পাগলীও রেহাই পায় না।
হায় রে পুরুষ ; সত্যি কি তোমরা মানুষ?যদি মানুষ হবে, তবে তোমাদের দাঁত কেন হায়নার মত রক্ত রাঙা?


পথের মোড়ে ষড়শীকে কেন শিকার হয় ইপটিজিং এর?
কেন ষাট বছরের বৃদ্ধাজননী ধর্ষিত  হয়  তোমাদের কুপ্রবৃত্তিতে?


নারী চায় নিরাপদ পথ চলতে
মান সম্মান সম্ভ্রম নিয়ে বাঁচতে
অথচ তোমরা তার তুলতুলে  অঙ্গ
খামছে, খুবলে  মিটাও তোমাদের বিষদাঁতে রাক্ষুসে ক্ষুধা।
মানি,  তোমাদের মত রক্ত মাংসে গড়া নারী হৃদয়েও
আছে কাম বাসনা
কামবাসনা আছে স্রষ্টার সৃষ্টি প্রতিটা প্রাণীকুলে
শ্রেণী  ভেদে তিনি একাক প্রাণীকে দিয়েছেন একাক ভঙ্গীমা।
মানুষকে করেছে সৃষ্টির শ্রেষ্ট,
তবু মানুষের পশুত্বের কাছে আজ বনের পশুও হার মানেছে।
হে পুরুষ,  বুকে হাত রেখে বলো
কটা পুরুষকে নারী   করেছে ইপটিজিং ?
ক'জন নারীদ্বারা পুরুষ হয়েছে ধর্ষিত?
ক'জন পুরুষকে চাকুরীর নামে  অফিসের বসের হাতে,
দিতে হয়েছে সম্ভ্রম, সম্মান?
ইতিহাসের পাতায় আজো রচিত হয়নি এমন কাহিনী ।
তোমাদের কালিমায় তোমরাই কোলুষিত করো সরলা রমনীকে
আবার তোমরাই ধিক্কার দিয়ে বলো কুলটা, বেশ্যা।
তোমাদের ঘৃণ্য পাপে অবলা অঘোরে আত্মহননে  প্রাণ বলি দেয়।
আচ্ছা নষ্ট নারী যদি বেশ্যা হয়, নষ্ট পুরুষ তবে কেন বেশ্যা নয়?
যে পাপে বলো নারীকে পাপী
সে পাপের  সমপাপী তুমিও


আর নয়, লাঞ্চনা পোহাবার দিন হয়েছে শেষ
চাই অধিকার,  মানুষরুপী মানবের কাছে  আর বিলাব না সম্ভ্রম।
খড়্গ হাতে ললনা তোরা নেমে আয় রাজ পথে আয়, নেমে আয়
আপন অধিকার ছিনিয়ে নে  জ্বালারে অগ্ন মশাল
আর ভিতি নয়, আর লাজ নয়,
পরিবারের ছেলে সন্তানটির মত
আমরাও মানুষ, আমাদেরও আছে মাথা উঁচু  করে বুক ফুলিয়ে বাঁচার অধিকার।


৭ মার্চ ২০১৮
সময় রাত ১১.২৯