১৫টি রুবাই
একটা রুবাই সন্ধ্যায় আমন্ত্রণ পেয়ে এই প্রথম রুবাই লেখার চেষ্টা করেছি।  জানিনা কতটুকু রুবাই হয়ে উঠেছে। তবে লিখতে যখন শুরু করেছি তখন বন্ধুদের প্রেরণায় অবশ্যই রুবাই রুবাই-ই হবে।


১.আকাশ জুড়ে মেঘের খেলা ছন্দ ওঠে দুলে
একটু নুয়ে আমায় ছুঁয়ে রং সে দিলো গুলে।
মেঘের কাজল আমায় দিয়ে বলল মিষ্টি হেসে
প্রেমের বানে খুন হয়ে তুই এবার যাবি ভেসে।


২.জল জমেছে চোখের কোণে কোন ব্যথায় কাঁদছে মন
কার বিহনে অবুঝ হৃদয়ে বাড়ছে কেবল দুখ দহন।
মেঘ আড়ালে সূর্য হাসে তবু কেন মলিন মুখ
মায়ায় ভরা এই ভূবণে কান্না হাসি এই তো সুখ।


৩. সন্ধ্যার আকাশ চাঁদ ঝলমল বইছে বাতাস মন্দা
সেই বাতাসে সুবাস ছড়ায় ফুল রজনীগন্ধা।
সান্ধ্য হাওয়া গায় লাগাতে চল না নদীর ঘাটে
আবির রাঙা সূর্যটা ওই যায় রে বুঝি পাটে।


৪.বন্দীনি আজ ডুকরে মরে  ছন্দ গেছে ভুলে
পূবাল হাওয়ায় তবু যেন উঠছে হৃদয় দুলে,
আকাশ জুড়ে আলো ছায়া করছে কেমন খেলা
হাতছানিতে বলছে কে ওয় আয় না সখী চলে।


৫.আমার বন্ধুর রুপের আলো চাঁদের চেয়ে ভালো
তাহার মায়ায় চাঁদনী তুমি নিজের আলো জ্বালো।
তুমি নুয়ে আমায় ছুঁয়ে দিলে বাঁধলে মায়ার ডোরে
আমার লাজুল লতা হৃদয় খানা লজ্জা রাঙা হলো।


৬.এক রক্ত মাংশে গড়া মানুষ আমি,আমি জানি সমান্তরাল কি,
হয়তো আজ মানুষের আড়ালে  অমানুষ  তাই মানতে পারি নি।
পারি নি বলে  পারবো না কভু তেমন তো আর নয়
দেখো বন্ধু দূর থেকে চেয়ে,চেষ্টা করি রাখতে মান  কথা যদি  দি।


৭.কেমন আছো শিশির কণা  চাঁদের সোহাগ পেয়ে
আঁধার ছেয়ে একলা বসে তোমার গান যাচ্ছি গেয়ে ।
চাইনা আলো হাতের মুঠোয় ভালো থাকো তুমি
শূন্য হৃদয় ডাকবে তোমায় থাকবে পথ চেয়ে।


৮.আঁধার রাতে ফোটা ফুলে  হাতে করে আনলো ভোর 
তবু তোমার ভাঙেনা  ঘুম খুলল ঐ আর হৃদয় ডোর।
ভোরের সুবাস অঙ্গে মেখে রঙ্গকরে যাচ্ছে দিন
একটু না হয় তুললেই সুর বাজলো না হয় চরণ দোর।


৯.চলতে চলতে হারিয়ে যাচ্ছে পথ
কুহু কুজনে কাড়ছে রিতি,নীতির নথ!
ধুকে ধুকে মরে হাজার রঙিন স্মৃতি
স্বার্থ সুতোয় বাঁধছে প্রীতি কে বন্ধু কেবা সৎ!!!


১০. ছোট্ট জীবন হাতের মুঠোয় আকাশ ভরা
লিখেছি চিঠি নীল ঘামে বোধের জরা;
ক্যানভাসে রঙ মিশিয়ে মিহিন মোহিনী  মায়া
বিশ্বাসে ভূত, ডাইনে বায়ে পেছনে ছুরির ধারা।


১১.কোন বিশ্বাসে ফেরাতে সুদিন ভেঙেছি প্রথার খাঁচা
বেঁধেছি যাদের হৃদয় দুয়ার খুলে,সোনা নয় ছিলো তারা কাচা
শিখেছি সূত্র, কৃতঘ্নতায়  এই কি ছিলো শুধু ভুল!
মধু ভেবে ভেবে  বিষ চুমুকে  আবেগী মালার ফুলে নাচা!


১২.নষ্ট কষ্টে টলোমলো জীবন ভিত
তবু অকারণ গেয়ে যাই কোন গীত
খেয়ালে বসে হীরের দামে কিনেছি তুচ্ছ কাঁচ,
জীবন কাহিনী নিত্য সাজাই এই যেন তার রীত।


১৩.খুব ইচ্ছে হয় আকাশটাকে ছুঁয়ে দেখি
সীমার বেড়াজাল ছিড়ে অসীমে পা রাখি!
আমিত্ব'কে চৌকাঠে বেঁধে বেরিয়ে পড়ি
নপুংসক মৃত্যু মেনে নিয়ে আর বেদনা না আঁকি।


১৪.ইচ্ছে হয়, চিলেকোঠার ঘরে গিয়ে বসি
ধূলো জমা ডায়রিটা হোক সময়ের অসি
রংচটা  লজ্জা,দ্বিধা, ভয় জীবন যেন ক্ষয়
দুঃসময়, দোষ না করেও তবু যে হই দোষী।

১৫.এসো আগুন ভেদ করে ভেসে যায় উদ্দাম   স্রোতে
চলো ছুটে যাই পাথর বাঁধানো বিবর্ণ সেই সময় রথে
ছুঁড়ে ফেলে দেই কাঁধে বয়ে আনা লাশটাকে
এগিয়ে চলি কালস্রোতে সীমানা পেরিতে , অসীমের পথে।