একটি কবিতা লেখবো বলে আবেগ আপ্লুত হয়ে
এসেছিলাম শহীদ মিনার বেদীতলে
হঠাৎ অশ্রুতে ঝাপসা হয়ে এলো চোখ
থমকে গেলো কলম
          কি  লিখবো কবিতায়!
আমি একটি ছবির মায়ায় পড়েছিলাম
একটি মাত্র ছবির মায়ায়।


ঘুম আসেনা দু'চোখের পাতায়
আবছায়া আলো আঁধারে
ভেসে ওঠে একটি ছবি আর কয়েকটি নাম-
         রফিল, সফিক, বরকত,সালাম।
আপন সুখ বিসর্জন দিয়ে যারা কিনেছিলো মায়ের মুখের মধুর হাসি
সুখের আলো ছড়িয়েছিল  বাংলার আনাচে কানাচে
কেন সে আলো আজ কেন এতো ক্ষিণ?


আবেগ আপ্লুত মনের কার্ণিশ বেয়ে
প্রেমের নামে চলছে পরকিয়া প্রেম প্রেম খেলা
সে বিষ দহনে ঘরে ঘরে জ্বলছে পাশবিক আগুন
রাজনীতিকেত ধমনিতে ছলনার অট্টহাসি
যদি প্রেম বলি জানিনা মিথ্যা হবে কিনা বলা
একটি প্রতিচ্ছবির মায়ায় পড়েছি বলে-
হৃদয়ের গভীর থেকে বেরিয়ে আসে একবুক দীর্ঘ নিঃশ্বাস।


এ কোন বাংলাদেশ?
এমন বাংলাদেশের জন্য কি ওরা দিয়েছে জীবন?
এ দেশ তোমার আমার আমাদের ভালোবাসার
তবে কেন আজো হয় লুণ্ঠন?
কেন ধর্ষিত হয় নারী, কেন ভাইয়ের বুক হয় বুলেট বিদ্ধ?
কেন পিতার লাশ ডিঙিয়ে নামতে হয় সিঁড়ি বেয়ে?


নিশাচর পাখির দল গাছের ডালে বসে
একে অন্যের সন্ধানে করে ডাকাডাকি,
সে ছন্দে কম্পিত হয় হৃদয় সিক্ত হয় অনুভূতি।
চেয়েছিলাম তোমার আদর্শে কেটে যাবে অনন্তকাল!
দিবালোকে ভাবনায় থাকবে মিশে তোমাদের নাম
নিশিতে চন্দ্রীমা আলোয় দেখব আগামীর পথ।
তোমাদের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজের বোঝা কাঁধে নিয়ে
পবিত্র বন্ধনে দূরপথ দিবো পাড়ি।


কিন্তু পা যে আমার চলেনা
এ ওর গায়ে ছোড়ে কাঁদা,
সম্মান নিয়ে খেলে টানাটানি  খেলা
কুয়ার ব্যাঙ তবু নিজেকে নিজেই ভেবে তারচেয়ে বড় হামবড়েমিয়া
             এ জগতে কেহ নেই আর।
আবেগ মোহে অন্ধ মনের অতৃপ্তি গুমরে গুমরে কাঁদে হৃদয়।
কেন আসেনি আমার ছবি,
ওর নাম কেন এলো আগে
হে মা মৃত্তিকা আমার আর কত সইবে যাতনা ?
আমি পাইনা শান্তনা খুঁজে কবিতার ভাষায়।


ঘুম আসেনা দু'চোখের পাতায়
আবছায়া আলো আঁধারে
ভেসে ওঠে একটি ছবি আর কয়েকটি নাম-
         রফিল, সফিক, বরকত,সালাম।
পতপত উড়ে যায় আসাদের শার্ট
খোকার শব করে ব্যবচ্ছেদ উঠোনের কোণে
দাওয়ায় বসে মা ভানে ধান,
ভিন্ন ধানের চিড়ে কোটে উড়কি ধানের মুড়কি ভাজে
রেললাইনের  মেঠোপথটার ধারে
আজো দাঁড়িয়ে থাকে এক মধ্যবয়সী নারী।
ভাঙা ঘরের দাওয়া ওড়ে পিতার মাথার পিনপিনে পাতলা পাকা চুল।
ভাঙনের গর্জনে শিহরিত হয় এ হৃদয়।


১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯