প্রিয় বন্ধুগণ,
আর কোনদিন তোমাদের জন্যে
লিখবনা কোন কবিতা, গল্প, গান
উঠবেনা কণ্ঠে আমার সুরের ঝঙ্কার।
এই প্রভাতে, আমি চাইনি দিতে তোমার এই সংবাদ
                 তবু দিয়ে গেলাম,
এই হিমেল কুয়াশাভরা ভোরে এক উষ্ণ বার্তা।
আমি বুনো লতার বুনো ফুল,
যতই থাক আমার বাহারি রং
আমার পাগল করা সুমিষ্ট সুবাসে ভুবন করি মাতয়ারা
তবু জানি, তোমাদের সভ্য সমাজের ফুলদানিতে-
                 ঠাই পাবোনা কোনদিন।
যতবার লিকলিকে ডগায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই
ততবারই তোমরা অবহেলা আর অনাদরে
আমাকে কেটে ছেটে ছোট করে দাও।
আবার মাথা তুলে দাঁড়াই, বাঁচতে চাই, শিকড় উপড়ে দাও
বঞ্চিত হই লাঞ্চিত হই নির্যাতিত সময়ের পাটাতনে
তবু আমরা যারা বুনোফুল তারা পইপই করে এগিয়ে চলি
তোমাদের জন্যে, তোমাদের খুশিতে পায় তুলি নর্তকি নূপুর।
দু’পাতার মুখ তুলে প্রথম যেদিন পৃথিবীর আলো দেখেছিলাম
সেদিন ভাবিনি, মানবের পৃথিবী এতো তিক্তময়
সরল চাঞ্চল্যে ভরা দস্যি জীবন
এমনি করে নিস্তেজ করে দেবে তোমারা-
তোমাদের ভালোবাসার মায়াজালের মিথ্যে ছলনায়।
তারপর অর্কিডে সাজাবে জীবন।
যুগযুগ ধরে, তোমাদেরি হাতে গড়া নিয়মের যাঁতাকলে
পিষ্ট আমাদের সরল মন।
মধুকর, ওই অর্কিডও কোন না কোন ফুল
জানি, প্রয়োজন ফুরালে তাকেও দেবে ছুড়ে বহুদূর
তোমাদের মুখে আছে বিষ,
              তাই নিজেদের কৃতী ভাবো
কিন্তু জানো কি তোমরা?
ফুলের নিশ্বাস- প্রশ্বাস -দীর্ঘশ্বাস অদৃশ্য বিষে ভরা
যে বিষ আপন খেয়ালে নিচ্ছ লুফে
তোমাদের খেয়ালের হেয়ালিতে সে বিষে
নিকোটিনের মত তিলে তিলে তোমরা নিঃশেষ হবে?
সময়ের খেয়ালে জন্ম আমাদের রাতের আঁধারে
ভোরের স্নিগ্ধ সোনালি আলোয় ঝরে পড়াই
তোমাদের কাছে আমাদের জন্ম জন্মান্তরের ধর্ম।
আমি আমার চঞ্চল দস্যি সারল্য মনটিকে দাফন করে
নিকষ অন্ধকারে নিমজিত হলাম আজ,
জানিনা কতটা ভালো থাকবো আমি
আর কতটা ভালো থাকবে তুমি, ও তোমরা
তবু করে যাই আশিষ ভালো থেকো বন্ধুবর, ভালোথেলো বন্ধুগণ।
তোমাদের জন্য সর্বদা শুভ কামনায় পথে ফোঁটা বুনোফুল।
২২ ডিসেম্বর ২০১৭
সময় সকাল ৬.১৫