তখন  সদ্য কৈশোর
প্রিয় ঠাকুমার হাত ধরে কতো যায়গায় না গেছি, মেঠো পথ পার হয়ে-
কিন্তু  একটি  অভিজ্ঞতা আমাকে তাড়া করে ফেরে
কতোটা বড় হলে একটি বাড়ি অমন বড় হয় সেই বয়সে জানা ছিলোনা
সামনেটায় ছিলো বিশাল পুকুর, একটা পুরনো মন্দির, গা ছমছমে  অনাঘ্রাতা বনবাদাড়, বড় বড় ভেষজ  গাছ, দাদীমার সাদা শাড়ী, তাদের পান বিনিময়, ও বাড়ির দাদীমার আভিজাত্য অহংকার ঝরে ঝরে পড়তো, অহংকার জিনিসটার সাথে, পার্থক্যবোধের সাথে সেই প্রথম  পরিচয়, সাত-আট বছর আগে একটি যুদ্ধ হয়ে গেছে, আমাদের বাড়িতে তেমন কিছু নেই, সব লুট হয়ে গেছে, আমরা ক'টাপ্রাণী আর আমাদের  সাদা বিড়ালটা একটা  বড় ঘরে আতংকে থাকি, রাত নামে নানারকম ভয়ভীতি নিয়ে,ঠাকুমা জড়িবুটির কাজ জানে,বিভিন্ন বয়সী নারীদের রোগমুক্তির আকুতি, সে নাকি স্বপ্নে নির্দেশিত হয়, আর ঔষধী গাছ খুঁজতে তাঁর  আঁচলের খুঁট ধরে সেই দুর্বোধ্য বাড়িতে  যাওয়া, কিসব গলা নামিয়ে ফিসফাস কথা, সাদাশাড়ি,জ্বীন ভূতের গল্প,  বিধবার রহস্য জোড়াতালি  দিয়ে আজ কিছু ছবি আঁকার চেষ্টা করি, এমন গ্রামীণ দাপুটে, ক্ষমতাবান নারী এরপরে চোখে পড়েছে খুব কম, কি তার ক্ষমতার উৎস আজও অজানা-
হাস্নাহেনার তীব্র সুবাস নিয়ে যায় স্মৃতির জগতে , ঠাকুমা নেই, মাও নেই, আমি প্রাপ্তবয়স্ক,
বহুদিন পরে কৌতুহল বশে
খুঁজতে গিয়ে দেখি সেইখানে রহস্য ঘেরা বাড়িটিও আজ নেই...