ছেলেবেলার সে দিনগুলো বড্ড মনে পড়ে,
গ্রীষ্মকালে ভরদুপুরে,  পুকুরে নেমে সাঁতার খেলা,
পাড়ার যত বখাটে ছেলে, আড্ডার ঠেক সন্ধ্যা বেলা।
সকাল-বিকাল ক্রিকেট খেলা প্লাসটিকের বলে,
সোনা মাখা সে দিনগুলো ভুলে গেলে চলে?
সকাল বেলার আলুসেদ্ধ আর পান্তাভাত।
গ্রীষ্মের সেই আম কুড়ানো কালবৈশাখীর রাত।
ঝড়ের শেষে ধুলোর বুকে বৃষ্টি যখন পড়ে,
ছেলেবেলার সে দিনগুলো বড্ড মনে পড়ে।


রামায়ণ মভাভারত দেখার সাদা কালো টিভি
Asian Age পেপার জুড়ে দেশ বিদেশের ছবি।
রেডিওতে ক্রিকেট শুনে চোখের সামনে ভাসতো।
সেদিনগুলো আবার যদি ফিরে ফিরে আসতো।
টাইম মেশিন চেপে চলো ফিরে যাই সেই দিনে,
স্কুলের পাশের কুলগাছটা নেবেই তোমায় চিনে।
ফিরবো সেই বকুল তলায়, গাঁথবো ফুলের মালা।
সন্ধ্যাবেলায় দেখতে যাব পুতুল নাচের পালা।
শীতের রাতে যাত্রা দেখা সাথে বাদাম ভাজা,
মঞ্চ জুড়ে চাঁদ সদাগর আর হরিশ্চন্দ্র রাজা।
পৌষ মাসে পিঠে খাওয়া উনুন পাড়ে বসে,
সেদিনের সেই স্মৃতিগুলো মানসপটে ভাসে।
গাছ থেকে নামিয়ে এনে খেজুর রসের হাড়ি,
গ্রামের সেই গাছি ভায়া নিয়ে আসতো বাড়ি।
বড়দিনে রাংতা মোড়া কেকে ফুটতো হাসি,
সেদিনের সেই সুখস্মৃতিতে ফিরতে ভালবাসি।


বর্ষাকালে বৃষ্টি ভিজে ফুটবল খেলার ধুম,
বাড়ি এসে ক্লান্ত হয়ে আসতো চোখে ঘুম।
সন্ধ্যা বেলা ব্যাঙের ডাকে সরগরম পাড়া,
এমন রাত জমতো না ভূতের গল্প ছাড়া।
হ্যারিকেনের আলোয় পড়া শিশুপাঠ্য বই,
সেদিনের স্মৃতিতে আজও বিভোর হয়ে রই।
আজও যখন দিনভোর বৃষ্টি যখন পড়ে,
সেইসব দিনগুলো বড্ড মনে পড়ে।


শারদ প্রাতে রাত পোহালে দেবীর চক্ষুদান।
রেডিওতে ভোরের বেলা মহালয়ার গান।
সকাল বিকাল গুনতে যেতাম প্যান্ডেলের বাঁশ,
পুজো পুজো গন্ধ মেখে কাটতো পুরো মাস।
আজও যখন আশ্বিন মাসে আগমণী সুর ভাসে,
সেদিনের সেই ছেলেবেলা ফিরে ফিরে আসে।