১৯১৫ সালের ৯ই জানুয়ারী
বোম্বের অ্যাপোলো বন্ধরে ভিড়লো এস এস অ্যারাবিয়া।
ভারতের মাটি স্পর্শ করলেন বাপু-মহাত্মা।
স্বাধীনতা আন্দোলনের তরী তখন মাঝ দরিয়ায়-
সঠিক দিশা দেখিয়ে সেই তরী বাইবে কে?
নরমপন্থী আর চরমপন্থীরা দুই ভাগে বিভক্ত।
পথ দেখালে তুমি চম্পারণ আর খেদা সত্যাগ্রহে।
হাজার হাজার সত্যাগ্রহীরা পা মেলালেন মিছিলে।
স্বাধীনতা আন্দোলনের মরা গাঙে এলো জোয়ার।
চরকা কাটা খাদির ধুতি আর চাদর,
হাতে লাঠি আর পায়ে খড়ম।
কোটি কোটি ভারতবাসীর সাক্ষাত প্রতিনিধি।
তুমি বাপু মহাত্মা হয়ে উঠলে দেশবাসীর নয়নের মণি।
তোমার ত্যাগ, তোমার আদর্শ ছড়িয়ে পড়লো ভারতের কোনায় কোনায়।
সবরমতি আশ্রমের ধুলো মাখা জীবন তোমার।
স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রাণপুরুষ হয়ে উঠলে তুমি।
ডান্ডির সেই লবন সত্যাগ্রহ আগুন হয়ে ছড়িয়ে পড়লো সারা দেশে।
মেদিনীপুরেও লবন আইন ভাঙা হলো।
তোমার লক্ষ্য তখন পূর্ণ স্বরাজ।
তোমার ইশারায় তখন কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী তরঙ্গায়িত হয়।
লাহোরে উড়লো জাতীয় পতাকা, পালিত হলো স্বাধীনতা দিবস।
হিংসার পথে সফলতা আসেনা তা তুমি দেখিয়েছো-
দক্ষিণ আফ্রিকার কালো মানুষের লড়াইয়ে।
দেশে ফিরে চম্পারণ খেদা আর ডান্ডিতে।
তোমার দেখানো পথেই প্রাণ পেলো স্বদেশী আন্দোলন।
৪২এর ভারত ছাড়ো - বৃটিশ সরকার আবার দেখলো
অহিংস ভারতের উত্থান।
তোমার মতবাদ ততদিনে সারা বিশ্বে সমাদৃত।
অবশেষ দেশ জুড়ে গণ আন্দোলনে স্বাধীনতা।
কিন্তু, নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস,
তোমাকেও হতে হল হিংসার বলি।
বাপু-মহাত্মা, তুমিও শেষে শহীদ হলে।
তিনটি গুলি বুকে নিয়ে ঢলে পড়লে মৃত্যুর কোলে।
কিন্তু তোমার আদর্শ আজও বেঁচে রয়েছে।
তোমার আদর্শ আর গান্ধীবাদ-
আজও লাঠি হাতে পথ দেখায় সব আন্দোলনে।
মহাত্মার মৃত্যু হয়নি, মহাত্মার মৃত্যু হয়না।