বাবু একটা ঘর দে, মাথা গোঁজার নেইকো ঠায়।
ঘরে আমার বড্ড অভাব, তোর দুয়োরে কাঁদছি তাই।
বাবু রে, একটু চাল দিবি? ঘরে একটুও দানা নেই,
তোর হাতে কলম আছে, চালাতেও তো মানা নেই।
অঝোর ধারায় বৃষ্টি হলে ঘরের ভেতর জল পড়ে,
বাবু একটা ত্রিপল দে, স্বামীটা আমার ধুঁকছে জ্বরে।
স্বনির্ভর দল করেছি, মিড-ডে-মিলের রান্না চাই,
আপনি যদি দেখেন সাহেব, তবে আমরা বেঁচে যাই।
আমি স্যার ছোট ঠিকাদার, ছোট-খাটো কাজ দিন,
যত দিন থাকবো বেঁচে ভুলবো না আপনার ঋণ।
বার্ধক্য ভাতা দিন স্যার ছেলে বউ দেয় না ভাত,
অনাহার আর রোগে ভুগে কাটছে আমার দিন-রাত।
বাবু একটা কাপড় দে, পড়নে আমার শাড়ি নেই,
হারিয়ে গেছে খোকার বাবা, বছর দুয়েক বাড়ি নেই।
বি-পি-এল লিষ্টে নাম ছিল মোর, কেমন করে কেটে যায়?
বলতে পারেন বিডিও সাহেব কোথায় গেলে বিচার পাই?
আমাদের ভোটার লিস্ট কেন এত ভুলে ভরা?
বলতে পারেন বিডিও সাহেব “কেন এত দায় সারা”?
বর্ষায় এই রাস্তা দিয়ে গরু ছাগলও হয়না পার,
বিডিও সাহেব জবাব দিন, কি করছেন প্রতিকার?
দেখছি দেখবো করতে করতে মাস-বছর কেটে যায়,
শেষে একদিন বিডিও সাহেব হাতে বদলির অর্ডার পায়।
নতুন সাহেব এসেই বলেন ‘আমায় একটু বুঝতে দিন’
বুঝতে বুঝতে ছমাস গেল এলাকা উন্নয়নহীন।
করতে হবে অনেক কাজ, অনেক কিছুই করার আছে,
আসুন সবাই মিলে মিশে নামি আরও মাটির কাছে।
ভুলো না সব ভারতবাসীই তোমার বোন - তোমার ভাই,
এদের সবার অন্ন চায়-প্রাণ চায়, স্বাস্থ্য চায়, শিক্ষা চায়,
সবার মুখে ভাষা চায়, সবার বুকে আশা চায়।
চাই আরও উন্নয়ন, সবাই যেন কাজ পায়।
রুটি-কাপড় মকান পেয়ে সবার মুখে ফুটুক হাসি,
এসো সবাই পথে নামি, ওদের একটু ভালবাসি।


উন্নয়নের দিন বদলে কাজ পেয়েছে গাঁয়ের লোক।
১০০ দিনের কাজ দিয়ে এভাবেই উন্নয়ন হোক।
ঢালাই রাস্তা ভুলিয়ে দিল পথের কাদা – পথের ধুলো,
ফুটলো হাসি মলিন মুখে, উজ্জ্বল আজ সেই মুখগুলো।
সবুজ সাথীর সাইকেল আর কন্যাশ্রীর অনুদান,
স্কুল্-ব্যাগ আর জুতো দিয়ে বিদ্যালয়ে ফিরল প্রাণ।
মিড-ডে-মিল এর খাবার আর শিক্ষাশ্রীর উপহার।
ড্রপ-আউট কমছে আর বাড়ছে উপস্থিতির হার।
প্রিয়জন হারিয়ে গেলে সাথে আছে ‘সমব্যাথী’,
মা-বোনেদের উন্নয়নে সাথে আছে ‘সমাজসাথী’।
দু’টাকা কিলো চাল পায় – ‘খাদ্যসাথী’ আছে সাথে।
এত কিছু সামলে থাকেন বিডিও সাহেব দক্ষ হাতে।
ঘরে ঘরে শৌচাগার আর পাড়ায় পাড়ায় জলের কল,
বিডিও সাহেব সাথে আছেন, বাড়ছে তাই মনোবল।
গ্রামের যত উন্নয়ন বিডিও অফিস থেকেই হয়,
সবাই মিলে কাজ করেন বলেই সেটা পারা যায়।
এর সাথে ভোটের সময় দিবারাত্রি পরিশ্রম,
শনিবার-রবিবার পরিবার ভুলে পায়ে পড়ে মাথার ঘাম।
অভাব-অভিযোগ অনুযোগ আর ভাললাগা-ভালবাসা,
এ কাজে তবু প্রাপ্তি আছে, আছে আলো, আছে আশা।
সবাই মিলে কাজ করেন তাই মলিন মুখে ফোটে হাসি,
সাহেব বলেন “এই হাসি মুখের জন্যই কাজকে এত ভালবাসি”।