বলি ও বিদ্যাসাগর? কী করে পারলে গো?
বয়স তখন নয় বছর বটেক,
বাপের সাথে চললে কোলকেতে,
রাস্তায় শিল পোঁতা দেখে শিখে নিলে ইংরিজি নাম্বার।
সেই ছোটবেলাতেই ত্যাজ ঠাওর করেছিলেন বাবা ঠাকুরদাস।
বীরসিংহের সিংহ শিশুই বটেক,
পড়াশোনা শিখে বিদ্যাসাগর অনেকেই হয়েছে,
কিন্তু তোমার পারা কাউরে চোখে পড়ে না।
এই ধর, তুমি যদি বর্ণপরিচয় না লিখতে,
তাহলে আমরা তো অক্ষরই চিনতে লারতাম।
বাংলা গদ্য তো তুমার হাতেই পিরাণ পেলো।
বলি ও বিদ্যাসাগর? কীকরে পারলে গো?
মেয়েদের ইস্কুলে পেঠিয়ে ঠুলি খোলা কি সহজ কতা?
আর বিধবাদের আবার বিয়ে দেওয়া!
সে কী করে পারলে গো?
এতো ত্যাজ তুমি কুতা থেকে পাইলে গো?
মা ভগবতী তোমায় পেটে ধরেছিলো তাই!
না হলে দেশের এই কালো আঁধার ঘুচোতো কে শুনি?
তা হ্যাঁ গো বিদ্যাসাগর, শুনেছো?
তুমার মূর্তি নাকি উয়ারা গুড়িয় দিলো!
একবার হাতটাও কাঁপলো না গো!
যে মানুষটা একখান খড়ম আর কাপড় পড়ে জীবন কাটিয়ে দিলো,
এত এত বিদ্যালয় খুললো, তার কিনা এই প্রতিদান!
হ্যাঁ গো, বিদ্যাসাগর আবার একটি বার এসো ক্যানে!
এখনও তো পাড়া গাঁয়ে বাল্যবিবাহ হচ্চে গো।
বিটি মাইয়ারা এখনও নাকি বোঝা।
তাই বাপে মায়ে বিটিদের তো বিয়ে দিতে পারলে বেঁচে যায়।
তুমি একবার এসো দিকি, আবার একটা লড়াই তোমায় লড়তে হবেক।
তুমার পারা একজন মানুষ খুব দরকার বটেক।
সমাজটোকে সবক শিখাতে তুমি ছাড়া আর কে পারবেক শুনি?
বলি ও বিদ্যাসাগর ? তাহলে তুমি আসছো তো ?