দোলে-ঝোলে-অম্বলে


ওরে...রং বরষে ভিগে চুনারেবালী
কেউ খেলে দোল, আর কেউ খেলে হোলি।
কেউ গায় হরিনাম, কেউ গেলে রাম।
কেউ বলে রং দে, কেউ বলে থাম।
কেউ রং বদলায়, কারো রং পাকা।
কারো কারো স্বভাব রং মেখে থাকা।
ভাং খেয়ে নেশা করে কেউ রংবাজ।
খোপাতে পলাশ কারো - প্রাকৃতিক সাজ।
রং দে তু মোহে... বলে কেউ গুনগুনিয়ে,
ব্যালকনির সুন্দরী মেয়ে দের শুনিয়ে।
ন্যারাপোড়া কাল ছিল, আজ সখের দোল;
ডিজের তালে নেচে নেচে খোল দ্বার খোল।
বলিউডি গ্লাম গার্লদের হোলির পোষাক দেখে,
স্বচ্ছ ভারত নিয়েছে আজ লজ্জ্বায় মুখ ঢেকে।
কেউ খেলে রং-রুটে, কেউ খেলে সোজা,
কারো স্বভাব রঙ মিলিয়ে মাথায় ফুল গোঁজা।
কেউ খুশি রঙ মাখিয়ে, কেউ রঙ মেখে।
কেউ কেউ খুশি শুধুই রঙ খেলা দেখে।
শান্তিপ্রিয় দোল খেলা হয় শান্তিনিকেতনে।
রংয়ের জোয়ার লাগে সেথা শরীরে ও মনে।
পলাশ গোঁজা খোপার গুঁতোয় ফাঁকা পলাশের ডাল।
বৃক্ষপ্রেমীর কষ্ট ভোলায় আবির মাখা গাল।
বৃন্দাবন ও মায়াপুরে দুহাত তুলে দোল;
প্রেমানন্দে বলে সবাই "বল হরিবোল"
লাঠমার হোলি খেলে ব্রজের বৃন্দাবন।
নেক্সট জেন পাবজি খেলে হাতে স্মার্ট ফোন।
মা বলেছে রঙ খেলোনা, স্কিন হবে নষ্ট,
ব্যালকনিতেই শৈশব আর মনে জমা কষ্ট।
অ্যাডিনো জ্বরে, বদ্ধ ঘরে শৈশব আজ বন্দী,
কোভিডের মত এও নাকি আজব এক ফন্দি।


"আজ আমাদের হোলি, আজ মানবো না কিচ্ছু।"
এই বার্তা নিয়ে এক হয়েছে পাড়ার যত বিচ্ছু।
লালু, ভুলু, টুনটুনিরা বালতিতে রং গোলে,
কেষ্ট, বিষ্টু, কালুদাদারা মদের বোতল খোলে,
আজ চলবে সব কিছুই ফুলটুস মস্তি।
দোলে মাতুক আপামোর-পাঁচতারা থেকে বস্তি।
ললনাদের রং দেয় রংবাজ ছোকরা,
তারস্বরে গাল পাড়ে সে বাড়ির লোকরা।
জলে স্থলে বনতলে লাগে যদি দোল,
হাতে নিয়ে পিচকারি, জলে রঙ গোল।
প্রকৃতির সাথে আজ রঙে রঙ মিলিয়ে,
হাসনুহানার মত দিই চলো বিলিয়ে।
বাঁধভাঙা ওই চাঁদের হাসির মেঘের সাথে খেলা,
বুনোফুলের সুবাস ছড়ায় সকাল সন্ধ্যা বেলা।
রঙ খেলছে শিমুল পলাশ, কোকিল ডাকে ওই,
রঙয়ের জোয়ার এল মনে তুমি এলে কই?


পরিশেষে বলি...


জেনে রেখো জীবনটা রঙমিলন্তি খেলা।
তাই বাড়ি ফিরো মাংস কিনে বসন্ত বেলা!