তেল মেখে স্নান করে গরম ভাত খাওয়া,
বইয়ের ব্যাগ নিয়ে রোজ ইস্কুলে যাওয়া।
ফাস্ট বেঞ্চে বসার জন্য স্কুলে যেতাম আগে,
পেছন সীটে বসতে কি আর কারো ভাল লাগে?
নালিশের খাতা ছিল মনিটারের কাছে,
ভয় ছিল সে খাতায় নাম উঠে যায় পাছে।
সেই জন্য মনিটারকে দিত সবাই তেল,
মনিটারেরও ভয় ছিল যদি করে সে ফেল?
পরীক্ষাতে সে বসত আমাদের মাঝখানে।
আমরা যে কি জিনিস ছিলাম মনিটারই তা জানে।
স্কুলের প্রেয়ার ছিল জন-গণ-মন
মানে না জেনেই গেয়েছিলাম, বুঝিনি তখনো।
দূরে কোথাও স্কুলে যখন প্রেয়ারের ঘণ্টা পড়ে,
ছোট্ট বেলার স্কুল বাড়িটা বড্ড মনে পড়ে।


ক্লাস রুমের দেওয়াল জুড়ে উপপাদ্য লেখা,
দেওয়াল লিখন পড়েই আমার জ্যামিতি শেখা।
দেওয়াল জুড়ে নিউটন আর সিন্ধু সভ্যতা,
আর ছিল ইঁচড়ে পাকা কিছু অসভ্যতা।
স্কুলে সেই দেওয়াল আজও একই রকম আছে,
আমরাই নেই শুধু সেই দেওয়ালের কাছে।
আজও কোনও স্কুল বাড়ির দেওয়াল লিখন পড়ে,
ছোট্ট বেলার স্কুল বাড়িটা বড্ড মনে পড়ে।


প্রতি বছর স্কুলে হত বানী বন্দনা
সেই দিনের স্মৃতিটাও ছিল মন্দ না।
স্কুল ড্রেস ছেড়ে সেদিন রঙিন পোশাক পড়া,
স্কুল বাড়িটা হাসি-খুশিতে ছিল সেদিন ভরা।
পুজোর শেষে পাল্লা দিয়ে চলত খিচুড়ি খাওয়া,
এমন করেই লেগেছিল প্রানে খুশির হাওয়া।
আজও, সরস্বতী পুজো যখন হয় আমাদের ঘরে,
ছোট্ট বেলার স্কুল বাড়িটা বড্ড মনে পড়ে।


পরীক্ষার আগে ছিল রিভিশনের ধুম,
টেনশনে চোখ থেকে উড়ে যেত ঘুম।
পরীক্ষার সময় তাই সব কিছু ভুলে,
সারা দিন পড়াশোনা বই খাতা খুলে।
কেউ কেউ টুকলিতে ছিল হাত পাকা,
পকেট ভর্তি জ্ঞান, মাথা ছিল ফাঁকা।
সিঁড়ি আর বাথরুমে টুকলিরা পেত ঠায়।
সেদিনের স্মৃতি গুলো কি ভাবে ভোলা যায়?
আজও কোনও স্কুলে গিয়ে টুকলি যখন চোখে পড়ে,
ছোট্ট বেলার স্কুল বাড়ি তোমায় বড্ড মনে পড়ে।


এক মাইল পায়ে হেঁটে যেতে হত ইস্কুলে,
সাইকেল ছিলনা যখন পড়ে ছিলাম মুশকিলে।
ক্লাস এইট পাশ করে সাইকেল ছড়েছি,
তারপর এই সাইকেল-ই সাথী ছিল, যত দিন পড়েছি।
আজও, একই আছে সে স্কুল, আর একই আছে পথের ধুলো
একই আছে সেই উচ্ছ্বাস, শুধু বদলে গেছে সে মুখ গুলো।
আজ, সে পথ দিয়ে যায় যখন, সেই স্কুল চোখে পড়ে,
ছোট্ট বেলার স্কুল বাড়িটা তোমায় বড্ড মনে পড়ে।