তোমার সৌন্দর্যের ধারে কুপোকাত কত শত বনিক, নাবিক, রাজাধিরাজ।
তোমার এক অঙ্গুলীয় ইশারায় নাচে প্রজাতন্ত্র বৈশালী থেকে দক্ষিণের মগধ-
তুমি পারোনি তোমার অঢেল রূপকে পর্দার আড়ালে ঢেকে রাখতে।
পিতৃ পরিচয়হীন তোমাকে আম্রতলে পেয়ে ‘আম্রপালী’ নাম  দিলে,
শাসক মনুদেবের কামাগ্নির রোষানলে পরিণয় যামিনীতে মৃত্যু হলো প্রণয়প্রার্থী পুষ্পকুমারের;
তারই ভোগের লালসায় ‘নগরবধূ’ হলে রাষ্ট্রীয় বিধানে।
নৃত্যগুণ আর চৌষট্টি কলার পটিয়সী নগ্ন-পায়ে নূপুরের ঝংকারে উত্তাল হয় নগরবধূ;
স্বর্গের উর্বশী, রম্ভা ও ম্লান হয়ে যেতো তার রূপের মদিরা আর নয়নবহ্নির উদগ্র কামনায়।


বিম্বিসারের কর্ণগোচরে তোমারি প্রশংসা- চিত্তে সন্তরি ঢেউ উত্তলে উঠে,
তোমাকে পাওয়ার নেশায় যুদ্ধের দামামা বেজেছিল বৈশালীতে।
যাকে তুমিও মনে -প্রাণে চেয়েছো সে-ই আজ তোমারি  পাণিপ্রার্থী;
তবুও তুমি চাওনি রক্তপাত, হানাহানি নিজ রাজ্যের- তাকে পাওয়ার উচ্ছ্বাসে।
পিতা-পুত্রের প্রেমের হেতু রাজা হলো বন্দী নিজ অপত্যে।
যুদ্ধাহত প্রেমিক-পুত্রকে সেবা দিয়ে পাঠিয়ে দিলে নিজ রাজ্যে সসম্মানে।
এতোই রূপের কারিশমা -অকামুক সন্ন্যাসী শ্রমণ ও সেই জালে হলেন কুপোকাত।
কামনা-বাসনার উর্দ্ধে থাকা শত শত পুরুষ ও তোমার রূপে ডুবে মরেছে;
তুমি ছিলে না কারো একার, ‘নগরবধূ’ হতে গিয়ে পারোনি হতে কারো একান্ত আপনজন।
গৌতম বুদ্ধের মোক্ষ্যের মন্ত্রে দীক্ষিতা হয়ে ‘নগরবধূ’ থেকে হলে ‘অরহান্ত’।


রচনাকাল-৯ ই আগষ্ট ২০২০