শেষের চড়টা আর সামলাতে পারেনি মীরা,
ছিটকে পরে গেল,
দরজার কার্নিশে মাথাটা বড্ড লেগেছে,
বা  হাতের শাঁখাটা ভেঙে খানিকটা চিড়ে গেছে হাতটা, ফোঁটা ফোঁটা রক্ত গড়িয়ে পরছে মেঝেতে।
শরীরে প্রচন্ড যন্ত্রণায় কানে ভেসে এল বাইক চালু করার শব্দ,
সে অফিস চলে গেছে।
গত সপ্তাহের বেল্টের কালশিটে দাগগুলো এখনো মোছেনি।
শরীরটাকে একটু টেনে, উঠে বসে,
ছুড়ে ফেলে দেওয়া ভাতের থালায়, ছড়ানো ভাতগুলো কুড়োতে লাগল।
দরজার বাইরে কচি দুটো চোখে বীভৎস ত্রাস।
বছর ছয়েকের স্নেহা দৌড়ে এসে মীরাকে জড়িয়ে ধরে, মায়ের বুকে মুখ লুকোয় সে..
"মা, তোমায় বাবা মারে কেন?"
"বাবা এত রাগ কেন করে?"
"ও কিছুনা সোনা, ছেলেদের রাগ থাকে বৈকি,
বাবা তো ছেলে মানুষ, কি বলতো আসলে বাবা সারাদিন অফিসে কত কাজ করে, কত পরিশ্রম করে,
তাই বাবা রেগে যায়, মেয়েদের একটু আধটু মার খেলে কিছু হয়না,
এই দেখ সোনা আমার কিচ্ছু হয়নি।"


.." আচ্ছা আমিও তবে মার খাব এমন ভাবে!!"


মীরার কাছে এর উত্তরটা ছিলনা,
ক্রমশ গলাটা ভারী হয়ে আসছিল,
মেয়েকে শক্তকরে বুকে ঝাপটে ধরে সে,
সে দিন শ্রাবণের কোন সকাল ছিল,
আর ছিল মুষলধারে বৃষ্টি, পাড়াপড়শিরা কেউ মীরার কান্না শুনতে পায়নি।