হন্তদন্ত হ'য়ে ছুটে কখনও কোথাও যেতে গেলে
বাধা পড়ে অনায়াস, চিৎকারে বউ ডেকে বলে :
একটু দাঁড়াও দিকি, ব্যস্ততায় জল নিলে না তো;
নিত্য নিত্য এরকম ব'লে আর পারা যায় কতো?
এই দ্যাখো স্যুট-বুট যথারীতি বেমালুম ভুলে
মহানন্দে চলেছেন অপরূপ বাবু দুলে দুলে!
ছিরি দ্যাখো, পায়ে কি না ঘরে পরা গ্যালোপ হাওয়াই!
এ-রকম তীব্র শ্লেষ, গুরুপাক বিষণ্ণ দাওয়াই
আমার কপালে লেখা, কম-বেশি জোটে রোজ রোজ,
যথাযোগ্য গালমন্দে নিয়মিত হয় ভুরিভোজ।
তবুও স্বীকার করি, কৃতজ্ঞতা প্রানে যায় খেলে;
কবিকুলে ভাগ্যগুনে বউ যদি এ-রকম মেলে,
লাভ আছে সীমাহীন; পরিপূর্ণ আনন্দও আছে;
তা না হ'লে লোকজন সমবেত হয়তোবা পাছে
টিটকিরি ক'রে ক'রে এতোদিনে বলতো পাগল!
তবু এই পৃ্থিবী'টা বাস্তবিক অবিমিশ্র গোল;
মাঝেমধ্যে এলোমেলো ব্যস্ততায় সে-ও ভুলে বসে;
কর্মহীন পথিকেরা সোৎসাহে চোখ ঘষে ঘষে
দেখে নেয় প্রান ভ'রে; দেখে নেয় দীর্ঘ মনঃপূত -
এক পায়ে চপ্পল, এক পায়ে শ্রীলেদার্স জুতো!
-পাগল-টাগল কিছু নির্ঘাৎ হবে হয়তোবা।
আমিও তখন এক অনিবার্য অপরূপ বোবা,
নিজেই নিজের সাথে আনমনে করি বিড়বিড়,
কবিতার খুব কাছে এসে গেছি, এখনই নিবিড়
পরশে কবিতা-ভূমি ভ'রে যাবে আনন্দ-অক্ষরে,
কাঙ্খিত কমল ফুটে জেগে রবে শান্ত সরোবরে।


পথ হেঁটে চলে যাই, বারে বারে ভুলে বসি পথ;
পথ-প্রান্তে লেখা আছে অনাগত সত্য ভবিষ্যত।
সেই অনাগত দিন খুঁজে খুঁজে ফিরি অবিরল;
-এক পায়ে জুতো আর এক পায়ে হাওয়াই চপ্পল!