ইতিহাস উপলব্ধ
-খায়রুজ্জামান সুইট।
  ১৪.০৮.২১
আমি তো দেখেছি
এ বাঙলার
শ্যামল প্রান্তর, খাল-বিল,
নদি-জল সবই।
হিজলতলির মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট
ধানসিঁড়ি মধুমতি বহতায়-
উর্বরা পলিমাটির সোনালি শস্যক্ষেত।


আমি দেখিনি কখনো শৈশব তোমার
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
দেখেছি তোমার টুঙ্গিপাড়া আর
বাড়ির পিছনে বয়ে যাওয়া-
ছোট এক নদি বহমান
রবি ঠাকুরের কবিতায় আঁকা।


-নাহিবার কালে, তোমার শৈশবে
অনেক খোকার সাথে
গামছায় ছেঁকে ছেঁকে, মাছ ধরিতে বুুঝি!


আমার জানা হয়নি কৈশোর তোমার
জেনেছি ফজলল করিমের,
কবিতা- গায়ের ডাক,
তোমারও তো ছিলো
ভিটের পিছনে বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ!
ক্ষেতের বাতাস, শত
খোকা আয় খোকা আয় বলে-
ডাকে নাই কি তোমায় দামাল ছেলের মত!


যৌবনে তোমার
অবিভক্ত ভারত বর্ষে মুজিব হয়ে উঠা,
পদ্মা গঙ্গা ঝিলম সিন্ধু হৃদয়ে একাকার!
সাতচল্লিশে পরিপূর্ণ মুজিব তুমি,
শেখ মুজিবুর রহমান।
অতঃপর চির ভাস্বর, অম্লান
পদ্মা মেঘনা যমুনা হলো ঠিকানা তোমার।
আটচল্লিশ থেকে পঞ্চান্নে তুমি মুজিব ভাই-
স্বাধিকারের এক জীবন্ত স্ফুলিঙ্গ বাঙালীর,
তেষট্টিতে নিলে দলের দায়ভার,
ছেষট্টিতে যখন গড়িলে-
ছয়দফা আন্দোলন দুর্বার,
তখন তুমি- নেতা শেখ মুজিব;
-প্রাণের এই বাংলার।


আটষট্টিতে আগরতলার
কথিত ষড়যন্ত্র মামলায়,
অমিত সাহসে- আবার যখন তুমি জেলে,
লাখো জনতার শ্লোগানে শ্লোগানে
কম্পিত হলো স্বদেশ,
তুমি বেরিয়ে এলে ঊনসত্তরে- বঙ্গবন্ধু হয়ে।


এমনি করে কখনো জেলে
কখনো বাহিরে তুমি
উৎসর্গিত যৌবন তোমার
ফিরেছিলো বর হয়ে,
তাই ইতিহাসের বরপুত্র তুমি-
অবিসংবাদী নেতা সত্তুরে।


থামে নাই কখনো পদ্মা-মেঘনা-যমুনার স্রোতধারা
গড়িয়াছে জল অবিরাম-
উদ্দাম উচ্ছ্বল।
জেগেছে-ভেঙ্গেছে ঢেউ, কুলে কুলে-
চেতনায় করেছো একাকার,
তারপর- আনিলে তুমি পৃথিবীর
অনবদ্য সেই কাব্যগাঁথা,
রেসকোর্স ময়দানে
ইতিহাসের মহানায়ক তুমি
-সাত মার্চ ঊনিশ'শ একাত্তর।


রচিলে তর্জনির ডগায়
রাজনীতির  মহাকাব্যখানি।
প্রকম্পিত দিগন্তে প্রতিধ্বনিত হলো-
"এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম"


জ্বেলেছিলে দাবানল,
এই বাংলার শ্যামল প্রান্তরে সেদিন-
গণমানুষের মুক্তি অভিলাষে।
দিলে বজ্র নিনাদে জনযুদ্ধের ডাক,
নিখুঁত রূপ-রেখাসহ যুদ্ধের আহবান
মথিত করিয়া আকাশ-বাতাস
বেজেছিলো সেইদিন জয়ভেরি-
আর শিকল ভাঙ্গার গান!!


আজ আমি দেখেছি তোমাকে,
জেনেছি তোমাকে,
বুঝেছি তোমাকে-
ভালোবাসায় গড়া তোমার হৃদয় কুটির।
রয়েছো মিশে মাটি মানুষে
অবিনাশী বাংলার,
সকল সত্তায়-
অম্লান তুমি, মহিমাময়-
সার্থক পিতা জাতির।