*************
আমার কাছে তুমি ঠিকানা চেয়েছো বন্ধু
কিভাবে যে দেই তোমাকে আমার ঠিকানা
আমার যে আজো কোন ঠিকানা হয়নি
কবি’র কি কোন প্রথামাফিক ঠিকানা থাকে

আমি এখনও কবি হয়েছি কিনা ঠিক জানিনে
কবিতাকে নিয়ে দিনরাত একটু নাড়াচাড়া করি
কিছু শব্দকে নিয়ে এদিক ওদিক সাজাইও বটে
কবিদের কবিতা আমার নিত্য প্রাণের খাদ্য
গোগ্রাসে গিলে যাই নতুন বা পুরাতনী কবিতা
কবি হয়তো এখনো নই, জানিনে হবও কিনা
আমার কিন্তু সত্যি কোন ঠিকানা নেই আজো

কবিদের ঠিকানা শুধু শব্দে ও কবিতায়
কবিদের ঠিকানা হয় মনের কল্পলোকে
কবিদের ঠিকানা থাকে স্বপ্নিল ভুবনে
কবিদের ঠিকানা মানসলোকের প্রান্তপথে

এইমাত্র নেমে এলাম কিলিমানজারোর উপত্যকা ঘুরে
কাল রাতে ছিলাম মাইনাস জিরোতে এভারেষ্ট’এর শৃঙ্গে
উফ, কী ঠাণ্ডা, কী ঠাণ্ডা, জমে গেছি সবাই এক্কেবারে
তবুও একান্ত উদগ্র আগ্রহে রাত কাটিয়ে দেখেছি
হিমালয়ের শরীর জুড়ে চাঁদের আলোর মিলনমেলা

এই কবিতা আসরেরও অনেকেই আমাদের সাথে ছিলেন
সুবীর, অজিতেশ, পলক, পরিতোষ, জয়, কামাল
প্রণব, সাইদুল, মিতা, মল্লিকা, আকাশ, নীরব ও শেখর
ছিলেন জীবনানন্দ, সুকান্ত, সুধীন্দ্র, অমিয় ও বুদ্ধদেব
জয় গোস্বামী, শ্রীজাত, রুদ্র এমন অনেকেইতো ছিলেন
হঠাৎ মাঝখানে ঠাকুর রবীন্দ্রনাথও  আড্ডায় এলেন

ওদের সবার কালরাতের কথা স্মরণ আছে কিনা জানিনে
কিন্তু আমার ঠিক মনে আছে – সবাই নিজেদের কবিতা পড়েছি
শেখর মাঝেমধ্যে আঁতলামো করে এর ওর কবিতা শুধরে দিলেন
সুধীন্দ্র চোখ টিপে শেখরকে নিরস্ত করতেও চেষ্টা করলেন
কবি নীরেন্দ্রনাথও বললেন, ‘ভুল ধরো না’তো
ও লিখতে লিখতেই ঠিক হয়ে যাবে দেখো’
সারারাত ধরে আড্ডা দিতে দিতেই গেলো কেটে
হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডার মধ্যেও আমরা ভুলেই গেছি
হিমালয়ের কোলে আমাদের কখন আসর জমে গেলো

আমাদের সবারই তখন একটিই ঠিকানা - কবিতা
কবিতাই দিয়েছে আমাদের অনুপম উষ্ণতা
কবিতাই দিয়েছে প্রাণে ভালোবাসার নোতুন সংজ্ঞা
কবিতাই দিয়েছে আমাদের ঠিকানা ভোলার ক্ষমতা

কবিতাই বলেছে ‘কবি - তোমার ঠিকানা এই বিশ্বজুড়ে’
এসো বন্ধু হাতে হাত রাখি – জীবন বাঁধি কবিতার সুরে ।।

[কবিতা আসরের এক অনুজ বন্ধু ঠিকানা জানতে চেয়েছেন আমার, তাঁকে দেবার মতো ঠিকানা আমার নেই, তাই তাঁকে দিলাম এই কবিতাখানি-এতে যদি তিনি অন্ততঃ অভিমান না করেন ]