**************
‘আর পারি না বাবা, এই পোড়া গতর আরতো চলে না
একুশের ভরা যৈবনের দিনে ঘরের বাইরে রেখেছি পা’
ঢেঁকিতে পায়ের ঠেকা দিতে দিতেই বলেন শান্তি মাসি
কত হবে বয়স এখন কেউ জানে না তা সত্তর কি আশি
ফাঁকি দিতে জানেন না তাই ঘরে ঘরে তাঁর খুউব কদর
নবান্নের দিনে বা চড়কের পার্বণে সবাই করে তাঁর খবর
চিড়া মুড়ির মোয়া হাজার রকম পদে মাসির তুলনা নাই
বিয়ে বা শ্রাদ্ধেও হাজার কাজের মেলায় মাসিকেই চাই

শীর্ণ শরীর, ফোকলা দাঁত, দুধ সাদা চুল মাথাটি জুড়ে
বাড়ি বাড়ি কাজ করেন সকাল সন্ধ্যে পাড়া ঘুরে ঘুরে
কেউ দেয় দুমুঠো চাল, কেউবা শশা-লাঊটি হাতে দেন
মাসির কোন অভিযোগ নেই কেউ দিলেন কি ঠকালেন
তিনকূলে মাসির নেই কেউ, পড়ে থাকেন ভাঙা কুটিরে
তুমুল যৌবন দিনে স্বামী তাঁর ওলাওঠায় গেছেন ছেড়ে
সেই থেকে মাসির একলা জীবন স্বামীর ছবিটি বুকে ধরে
কী কঠিন সময় করেছেন পার কত প্রলোভন উপেক্ষা করে

ঘোর শ্রাবণের কোন একদিন দেখা গেল মাসি আর নেই
জানা গেল পরে ভিটেবাড়ী সঞ্চয় দিয়ে গেছেন তিনি
                        মা তেরেসার শিশুসদনেই !!