________________


ক্ষুধায় দীর্ণ মুখ শীর্ণ শরীর নিয়েই ওরা
মিছিলে এসেছিলো
ওরা জানত না মিছিল কি জিনিস
মিছিল মানে শুধু পায়ে পায়ে হাঁটা
তাই বলা হয়েছিল ওদের
বলা হয়েছিল মিছিলে গেলেই
মিলবে তিনশ’টি টাকা, তিনশত!
কতদিন কাজ মিলেনি,
কতদিন পেটে পড়েনি দু’মুঠো ভাত ।


ওরাই ফসল ফলায়
কিন্তু ওদের পেটেই খাবার জোটে না
ওরাই ওই বহুতল ইমারত বানায়
কিন্তু ওদের মাথাগোঁজার ঠাঁইটুকুও নেই
ওরাই পিচঢালা রাস্তা বানায়
কিন্তু ওদের সেই রাস্তায়
স্বাধীনভাবে চলার অধিকার নেই
ওরাই মিলের কাপড় বানায়
কিন্তু ওদেরই নিজের শরীর ঢাকবার
অপরিহার্য বস্ত্র নেই !


তিনশতটি টাকার আশাতেই ওরা এসেছিল
কিন্তু একী, এ যে চারিদিকে বোমা, বুলেট
ইটের বৃষ্টি, ধর ধর, পালাও পালাও
বাসে আগুন, মরিয়া হয়ে জলন্ত বাস হতে
মানুষের প্রাণ বাঁচানোর কী আকুতি, কী হাহাকার
একটা ছোট্ট শিশু দাউ দাউ আগুনে পুড়ে যাচ্ছে
সবাই পালাচ্ছে শুধু পালাচ্ছে, পালাচ্ছে


হঠাৎ ওই শীর্ণ একটি হাত সেই আগুনে ছুটে গিয়ে
নিয়ে এলো জলন্ত ওই শিশুটিকে;
নিজের গায়ের ছেঁড়া কাঁথাটি জড়িয়ে জড়িয়ে
শিশুটির শরীর হতে আগুন নিভিয়েই দিলো
আর সেই আগুনেই জ্বলে যাচ্ছে
এখন সেই মায়াবী শীর্ণ হাত
সেই দীর্ণ মুখ, ক্ষুধার্ত শরীর


না, সেই মহান মানুষটি কখনো
খবরের শিরোনাম হয়নি
কেউ তাকে বাঁচাতেও এগিয়ে আসে নি ।
খবরওয়ালারা এমন দীর্ণ মানুষের
ত্যাগের কথা লেখে না –
কারণ সবাই জানে গরীবের খবর
বাজারে বিকোয় না ।


নেতারা, ধনীরা, পুঁজিপতিরা
পৃথিবীর সব ভাল ভাল জিনিসের মত
খবরও কিনে খায় গোগ্রাসে
গরীবদের অত খবরে কাজ কি বলুন !