বিশ বছর পরে
একদিন হয়তো ঘুম ভেঙে দেখবো
সন্ধে হয়ে গেছে প্রায়
দু একটা পাখি ডেকে উঠছে কোথাও
শেষ বিকেলের আবছা আলো আর নিরব আমেজে আড়মোড় ভেঙে তাকিয়ে দেখবো
তুমি হয়তোবা পান চিবোচ্ছো সামান্য অবসরে
আমাদের উঠোনটিতে আমাদের মেয়েটা
হাস-মুরগীগুলোকে তাড়িয়ে নিচ্ছে
ছেলেটা খেলা শেষে ফিরলো মাত্র
এখন সন্ধে নামবে গ্রামে
পুরো উঠোন জুড়ে রজনীগন্ধা গন্ধ ছড়াবে
ঝিঁঝিঁ পোকাগুলো রাত ডেকে আনবে
কারেন্ট চলে গেছে অনেক আগেই
কুপি বাতি জালাতে জালাতে অনেক কথা শোনাবে আমায়
বাজারে যাই অথচ কেরোসিন আনতে ভুলে যাই কেনো?
আমি আজ আনবো বলে একটু চা খেতে চাইবো
আমের ফুল এসেছে
কাঠালের এসেছে অনেক মুচি
লেবু গাছটা নুয়ে পড়েছে
বেল এবার জেকে ধরেছে
আমি যেনো কি ভাবতে থাকবো
হঠাৎ তুমি চা এনে বলবে খেয়াল আছে কিছু?
সব ভাবনা মিলিয়ে যাবে তোমার কর্কশ স্বরের আড়ালে
তোমার সকল দায়ীত্বে ভরা মুখখানা নিয়ে তাকিয়ে বলবে
বড় গাছটা কাটাতে হবে,
ছেলে মেয়ের স্কুল ফিস
পুকুর থেকে মাছ ধরাতে হবে
পড়শু আসবে মেহমান
বাজার সদাই করতে হবে নাকি!
আমি নামাজের কথা বলে বের হয়ে যাবো।
তুমি টর্চ লাইটটা এগিয়ে দিবে।
এরপর কত দিন আসবে যাবে
হয়তো কোনো একদিন শুতে গিয়ে
হাসতে হাসতে বলবো
ভালোইতো দিন কাটিয়ে দিলাম
ছেলে মেয়ের বিয়ে দিলাম
নাতি-নাতনি দেখলাম
হয়তো পাশ ফিরে তোমায় অতীতের অনেক কথাই বলবো
ঠিক সব কথার শেষে
যখন ফিরে আসতে চাইবো আজটায়
আমাদের আফসোস থাকবেনা কোনো
আমরা যা হারিয়েছি
ঢের পেয়েছি তার চেয়ে
হয়তো তুমি কিঞ্চিৎ মন খারাপ করবে
কিন্তু আমার হাতটা ধরবে আর বলবে
আমার আর চাওয়া পাওয়া নেই
এই সুখইতো পাবো বলে আশা করিনি
আল্লাহ আমায় সব দিয়েছে!
এভাবেই একদিন হয়তো তোমাকে ছেড়ে আগেই চলে যাবো
হয়তো আক্ষেপ থাকবেনা,
হয়তো তুমি ব্যাথা পাবে খুব।
হয়তো তুমি সবার সাথে বলবে
আমার মানুষটা বড় ভালো ছিলো খুব
হয়তো তোমার চোখ দুটো ভিজে উঠবে
হয়তো কোনো একদিন ঘুম থেকে তুমিও আর জাগবেনা
এ জীবনটাই আমাদের হোক
এ ভাবনাটাই আমাদের হোক
এ প্রেম হোক আমাদের শাশ্বত!