তোমার ভিজে যাওয়া ঠোঁটে দেখেছি
ভালোবাসার বর্ণমালা
তোমার উদাসী চোখে দেখেছি
লোভহীন উত্তাপ
বৈশাখের তীব্র দাবদাহেও
ভেজেনি তোমার অন্দরমহল।


মাটির কাছাকাছি দেখেছি অনেকবার
মেঠো পথে মিশে গেছে শৈশব
ভাঙা চোরা গ্রাম্য বাড়িতে হেসেছো
অভাবেও প্রাণখোলা …
এখন তোমার বৈভব এসেছে
শরীরে এবং অর্থে ।


মনের জানালায় উঁকি দিয়ে দেখো
মন কেমন করা দুপুর
অভাবে জোটেনি দু’বেলা খাবার
কেটেছে কতো অভুক্ত রাত
ধীরে ধীরে শরীর হয়েছে বিকশিত
সেখানে অভাব মেনেছে হার।


বন্য জ্যোৎস্নার হালকা আলোতে
তোমার শরীরে ডেকেছে বান
গরীবের ঘরে পূর্ণ যুবতী
নিদ্রাহীন রাত কেটে যায়
অসহায় অভাবী বাবার।


শহর থেকে ঘুরতে এলো
ধনীর ঘরের দুলাল
সেদিনই ছিল বিয়ে তোমার
বাজে সাঁঝের সানাই
হঠাৎ গেলো থেমে সানাই
আসবে না কা’পুরুষ বর
পণের টাকা আছে বাকী ...


সানাই গেলো থেমে
আনন্দঘন বিয়ে বাড়ী
নিমেষে বিষাদময়
সারা গ্রামে ছড়িয়ে গেল
তোমার হবে না বিয়ে
গ্রাম্য জীবনে এমন ঘটনা
শুনেছে অনেকবার...


অবাক বিস্ময়ে চেয়ে থাকে
ধনীর ঘরের দুলাল
পুরুত মশাই চীৎকারে বলে-
লগ্ন যে বয়ে যায
লগ্নভ্রষ্টা মেয়ে ভীষণ মন্দ হয়।


হঠাৎ কী যে ঘটে গেল
মাথার মধ্যে খেয়াল
বিয়ে করতে হল রাজি
মেয়ে যে মন্দ নয়
গ্রামে উঠলো আবার বেজে
বিয়ের বাজনা, সানাই
কার কপালে কী যে লেখা
মানুষ জানে না ...


এভাবে এসেছে তোমার বৈভব
তুমি আজ কতো সুখী
সব গরীবের মেয়ের ভাগ্যে
কেন জোটে না এমন বৈভব
পণের বলি কত অভাগী
পায় না সুখের ঘর
সভ্য সমাজে আজও আছে
এমন বর্বর কাজ।।


   *******