আমার এ শহরের চুপচাপ নিরাবতাকে চিনি। যখন শহরে নেমে আসে শেষ শরতের শিউলি মেখে গায়ে তখন এ ব্যস্ত এ শহরটাকে খুব বেশি নিশ্চুপ মনে হয়। একটি ষ্ট্রীট লাইট বারবার জ্বলছে আর নিভছে কিন্তু আকাশের বুকে লেগে আছে এক অংকিত চাঁদ। বিরামহীন সে ঝুলে আছে কোন ক্লান্তি নেই। পুবকোনা থেকে একটি মিষ্টি বাতাস এসে ছুঁয়ে দিয়ে যায় ঘুমন্ত পাগলির শরীর আর চুলে জট পাকানো মোকাব্বর মিয়া গাজায় দিচ্ছে টান। বাতাসে তীব্র গন্ধ ঢেকে দিচ্ছে শিউলির ঘ্রাণ। একটু পরেই সে বস্তা মুড়ি দিয়ে পাগলির পাশে শুয়ে পড়বে তিন টে কুকুর লেজ শুকে শুকে দৌড়ে যাচ্ছে দূরে। কখনোবা ভিন পাড়ার কুকুর দেখে বারকিং করে উঠবে।
আমি এ শহরের নিস্তব্ধতাকে চিনি
একটু দূরে একটা পুলিশের গাড়ির ভেতর থেকে চুড়ির শব্দ ভেসে আসছে সাথে সফেদা বানুর হাসি আর বিড়ির ধোয়া। কয়েকটা বেরসিক ট্রাক গরজন করতে করতে চলে যাচ্ছে দূরে। রাস্তার ওপাশে ইকবাল সাহেবের বাসা তিনি রাত, কফি খান আর কবিতা লেখেন। আমি রাতের এ নিস্তব্ধতাকে চিনি যেখানে অন্ধকারে ধামাচাপা চলে বিদ্যাপতির লাশ। এ নিস্তব্ধতা কখনো হিংস্র কখনো শুভ্র আবার কখনোবা শিশুর নিশপাপ লালার মতই সুন্দর। শুভ বিদায় রাত্রি। ভালো থেকো তুমি শরতের শিউলি মেখে গায়ে।