ফেরা


ওরা হাঁটছিল;যার যার ডেরা ছেড়ে
অলিগলি পথ ভেঙ্গে
রাজপথ ধরে,ওরা হাঁটছিল।
মাথায় বোঁচকা কারো,ছাতু চিঁড়ে কিছু বাঁধা
কারো হাত ক্ষুধার্ত মেয়েটির হাতে ধরা।
সন্তান-সম্ভবা স্ত্রী,জিরোতে চেয়েও
ফের হাঁটা শুরু করা।
মাথার উপরে রোদ;তেষ্টায় ফেটে গেছে ছাতি
কখনো মিলেছে রুটি---একটি,দুটি।
কখন নেমেছে রাত ; দিন-রাত ভুলে
অনেক লোকের দলে
ওরা হাঁটছিল।
পিছনে ভীষণ ভয় করোনার
তার চেয়ে বেশি ভয়, না খেয়ে মরার।
কখনো পুলিশে আটকে দিয়েছে পথ
নামিয়ে দিয়েছে লরি থেকে,
মর্টার মেসিনের খোল থেকে।
তাদের বরাদ্দ নয় ট্রেন,নামেনি যে প্লেন
তাদেরকে দেখে।
নিজ দেশে পরিযায়ী,বোম্বে,পুণে থেকে
আমেদাবাদ থেকে,হায়দ্রাবাদ থেকে
মাইল,মাইল হেঁটে
ওরা ফিরছিল।
কখন ট্রলিতেই ঘুমিয়ে পড়েছে ছেলে
পিছিয়ে পড়েছে মেয়ে,
লুটিয়ে পড়েছে পথে কাউকে না বলে ;
কেউ জানলো না,কতজন এভাবেই গেল চলে।
কেউ ভোরে,রাজপথ ছেড়ে
হাঁটা দিল রেলপথ ধরে।
হাঁটতে হাঁটতে পথে,পড়ে গেছে কতবার
কতবার,পড়া থেকে বেঁচে গেছে কোনমতে
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে তবু হেঁটে গেছে
উঁচু- নীচু রেলপথে।
শ্রান্তিতে ঘুমিয়ে পড়েছে খুব রাতে ;
সকালের ট্রেন চাপা দিয়ে চলে গেছে---
তারা জানল না কেউ,উঠল না আর জেগে।
কোন দেশে হেঁটে ফিরছিল তারা
শ্রমিকের দেশ---কোন সে স্বদেশ ?
কোন দেশ ছেড়ে কোন দেশে তারা ফিরছিল?


কেউ জাগল না,কেউ উঠল না রেগে।