বৃষ্টির পূর্বক্ষণে সেদিন উড়েছিলো ধূলিকণা,
গাছের রোগা পাতাগুলো
বাতাসের তীব্রতা ছিলো খুব,
আকাশে ছিলো মেঘের মেলা।
জানালার ধারে দাড়িয়ে অবলোকন করছিলাম,
প্রকৃতিক রূপমাধুরী হঠাৎ পাল্টে যাওয়া।
সঙ্গে ছিলো বন্ধু রায়হান,
ওর কথাগুলো হঠাৎ হঠাৎ হাসায়,
মাঝেমাঝে ভাবায় ও বটে
ছেলেটা অদ্ভুত,
অশ্রু লুকাতে জানে।
ওর জীবনে ঘুমন্ত একটা কষ্ট আছে,
যদিও সেটা জাগ্রত কিন্তু ও আড়াল করে রাখে।
আম্মুকে বললাম, আম্মু দুকাপ কফি দাও
আম্মু কফি দিলো,
বর্ষার দিনে কফির স্বাদ একটু যেনো বেশিই মনে হয়
কফি পান করতে করতে রায়হানকে বললাম,
আকাশের চেয়ে কি মানুষের কষ্ট বেশি হতে পারে
রায়হান হাসলো,
অদ্ভুত সে হাসি
বৃষ্টির মাঝে হঠাৎ রোদের মতো।
রায়হান জানালার গ্রিল থেকে হাত সরিয়ে,
নির্বাকে তাকালো অদূরে তালগাছটার দিকে
শত শত বাবুই পাখি বাসা বেঁধেছে সেখানে,
বৃষ্টির তীব্রতা কিছুটা কমেছে তখন
দক্ষিণা জোরালো একটা বাতাস এলো
বাবুই পাখির একটা বাসা লুটিয়ে পড়লো বৃষ্টির জলে,
দুটি বাচ্চা ছিলো পাখির বাসায়
আমি দেখলাম চেয়ে,
মা পাখিটা বৃষ্টির জলে ভিজছে,
আর ডাকছে
রায়হান কফি রেখে আমার দিকে তাকালো,
বললো,মানুষের কষ্ট তার মায়া।
সত্যিই তাই,
বাবুই পাখি চাইলেই ফিরে যেতো পারতো,
তার নূতন ঘরে
যাইনি
বাচ্চার মায়ায় সে বৃষ্টির জলে ভিজছে।
রায়হান চোখ মুছলো,
বললো,কাঁচের জানালা দেখেছ
এপার থেকে ওপার স্পষ্ট দেখা যায়,
চাইলেই ওপারে দেখা বস্তুটাকে স্পর্শ করা যায়না
মানুষের কষ্টটাও ঠিক তেমন,
চাইলেই ভোলা যায়না,
শুধু কষ্ট অনুভব করা যায়
সারাজীবন অশ্রু ঝরাতে হয়।
-----------------
২৮-০২-২০১৯ইং
বরিশাল।