গল্পটি আজও পড়া হয় নি পুরোটা । বইয়ের শেষ পাতাটি মনে হয় আজও আমি খুঁজে পাই নি। পুরো টেবিল তন্য তন্য করে খুঁজলাম, কোথাও পেলাম না। যতদূর মনে পড়ে আমার, সেদিনকার কথা- শেষ বিকেলে তুমি আমাকে দেবে বলে তোমার সব থেকে প্রিয় উপন্যাসটি আমার জন্যে নিয়ে আমার বাড়ির নিচে তপ্ত রোদ্দুরে দাঁড়িয়েছিলে। সূর্যের আলো তোমায় বিরক্ত করতে না পেরে যেন ক্লান্ত হয়ে মেঘের আড়াল হয়ে গিয়েছিলো। অবশেষে আমি এলাম যখন তোমার মুখে এক চিলতে হাসির রেখা যেন নিমিষেই তোমার নিজেকে আমার সামনে মেলে ধরলো। তবে আমার সেদিনকার নিরবতাই দায়ী ছিলো তোমার ঐ হাসি নিমিষেই গায়েব করার জন্যে। তুমি চলে গেলে, পেছন ফিরে তাকালেও না। তুমি মানুষের ভিড়ে মিলিয়ে গেলে তোমায় আর সেদিন পরমুহুরতে আমি নির্ণয় করতে পারলাম না সবার মাঝে। তবে যাবার আগে তোমার শেষ উপন্যাসটা আমার হাতে গুজে দিয়েছিলে, আমার দিকে একবার ফিরে তাকালেও না তারপর, চলে গেলে। আমার নিরব গর্জনও সেদিন তোমার কানে আঘাত হানে নি। বাসায় যখন ফিরলাম সন্ধ্যার মোমবাতির আলোয় বইটি নাম যেন জ্বলজ্বল করছে। বইয়ের মলাটে হাত লাগাতেই অনুভব করতে পারলাম মনে হয় তোমায় । মনে হলো তুমি চলে যাও নি। মনে হলো তুমি আবার ফিরে এসেছো এই আমারই কাছে। বইটি পড়তে পড়তে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম টেরই পেলাম না। সকালে টের পেলাম মাথার কাছে কে যেন বালিশ গুঁজে দিচ্ছে। ঘুম ভেঙ্গে গেলো তখন। টেবিলের দিকে চোখ গেলো । তবে সেখানে বইটি নেই। মনে করেছিলাম, ভোরে মা বোধ হয় ঘর গোছানোর সময় শেলফে তুলে রেখেছিলো। পরে মা কে জিজ্ঞেস করলাম, প্রতি-উত্তরে না বোধক শব্দ মায়ের । টেবিলে নাকি কোন বইই ছিলো না । মন আমার সায় দিলো না । এখনও সায় দেয় না এই ভেবে যে ওখানে কোন বই ছিলো না। স্বপ্নের ঘোরে বাস্তবে পৌঁছানো কি আদৌ সম্ভব?.................................।