চৈতন্যের দেয়াল বিদীর্ণ করে বারবার ভাসছে একটি মুখ।
শত পর্দা দিয়ে চিত্ত ঢেকে দিলাও ;
পর্দা ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে তার বৃষ্টিস্নাত মুখ।
আজও ভাসে,
তার স্নিগ্ধ বদন জুড়ে লেপ্টে আছে
বিন্দু বিন্দু সচ্ছ বৃষ্টির রূপালী জল।
এলো পাথারি বাতাস আর মাতাল বৃষ্টির গুড়িগুড়ি জলে,
মিয়েটা সবে স্নান করে উঠেছে বলেই মনে হবে।
ধপ করে মঙ্গল প্রদীপের মত ছাতাটা বন্ধ করে ; সোজা উঠে এলো
মনি চাচার ছাওনি টানা ছোট্ট দোকানটাতে।
ততক্ষণে বৃষ্টির ফোটারা শহরের বুক জুড়ে প্রবল দাপটে
মার্চ শুরু করে দিয়েছে, যেন কোন উড়ন্ত জল বিক্রম।
মায়াবিনীর মোহনীয় রূপে সবাই বিমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে,
এ যেন কোন এক জ্যোৎস্না রাতের চাঁদের আশ্রম।
বাঁকা ধনুকের ন্যায় তার ভ্রু দুটো ; স্পস্ট ফুটে উঠেছে
শরতের ধুসর ভাসমান মেঘের মত।
তার সুতীক্ষ্ণ ভ্রুদ্বয়ের অগ্রভাগ তীরের ধারালো ফলার মত
বারবার আঘাত হানছে খুন প্রস্রবণ হৃদয়ে।
কিন্তু দোকানের সকলে তাকিয়ে আছে মায়াবিনর
হালকা ভেজা স্ফীত বক্ষ পানে,
যেন কালো শকুন ক্ষুধার্ত উদরে ছিড়ে খাওয়ার অভিপ্রায়ে।
ফেরানো যাচ্ছিলোনা দুটি চোখ কোন ভাবেই
তার স্নিগ্ধ লাবণ্যময় বদন থেকে।
অধরে তার জমে ছিল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুক্তা দানার ন্যায় ;
বৃষ্টির ফোটা থেকে ছিটকে পরা অবহেলিত জল কনা।
তার নারীত্বের প্রতিটা ভাজ ভেজা কাপড়ে
স্পস্ট ভেসে উঠেছে মেঘনার স্বচ্ছ নিস্তব্ধ জেলের মত।
জল ঝাপটিতে ঈশৎ ভেজা চুল তার
পিঠ জড়িয়ে নেমে গেছে নিতম্ব অবধি।
আর কিছু অবাধ্য চুল বাতাসে উড়ে এসে সুপ্ত
শিশুর ন্যায় পরম আবেশে লেপ্টে আছে তার বদনে।
এ রূপ আরো মোহনীয় করে তুলেছে মন দেউলে।
সহসা চশমাটা খুলে নেয়াতে চোখ দুটো মনে হলো ;
যেন কোন এক নীল শান্ত জলধি।
ধিরে ধিরে বৃষ্টির রাজত্ব কমে এলো শহরের বুকে,
শান্ত হয়ে এলো প্রবল বাতাস।
শহরের প্রহর আবার চলতে শুরু করলো আপন সুখে।
হঠাৎ কোথা থেকে-----
একটা রিকশা এসে দাঁড়ালো দোকানের কাছে।
নীল প্রজাতির প্রস্থের মত হুট করে মেয়েটা
উঠে গেল হুক টানা রিকশাটিতে।
আশার নিভে যাওয়া আলো নিয়ে রিকশায় তাকাতেই
মেয়েটা নিজ চুলে হাত বুলিয়ে ঈশৎ মুচকি হাসি দিলো ;
পাষান রিকশাওয়ালা আমার মন-পাঁজরের অবস্থা না বুঝে
ঝটপট রিকশা হাঁকিয়ে ছুটে চলল।
ধপ করে আশার আলোটা মুহূর্তেই নিভে গেলো।
একটু সাহস করে মেয়েটার নাম জানা হলো না,
জানা হলোনা তার ঠিকানা।
চায়ের কাপের শেষ ধুঁয়া টুকু কষ্টের এক নিশ্বাসে
উড়িয়ে দিয়ে, হারালাম নিজের প্রণয় সিমানা।
তার নাম আর জানা হলো না,
হয়তোবা আর হবেও না। ........