ওকে আমি চিনি না; বাড়ি-ঘর, বাবা-মা
সব অজানা– সারাদিন অফিসে থাকি,
দিনের আলোয় কোনো দিন তার সাথে
                          আমার দেখা হয় না।
ঘরে ফিরলেই– উপস্থিতি টের পায় সে;
চলে আসে মৃদু পায়ে, কিছু খাবার চাই–
                             করুণ আকুতি করে।
গিন্নীকে বলি, 'দাও না কিছুমিছু........।
গিন্নী ভীষণ ক্ষ্যাপে; বলে, 'ও নিমোক হারাম।'


পিড়াপীড়িতে প্রতিরাতে খাবার পায় সে,
বাইরে থেকেও মাঝে মধ্যে কিছুমিছু আনি
                         পকেট ফুটো করে,
মাঝে-মাঝে শুনি সে নিজেই সকালের জন্য
চা বানানোর দুধটুকু, মেয়ের জন্য ভেজে রাখা
মাছগুলোও খেয়ে যায় আনন্দে! গিন্নী বকে–
'সব তোমার জন্য, সব তোমার আশকারাদানে,
আর ছাড়ছি না, এবার লাঠি পেটা করব তাকে।'


বলি, 'সে অবুঝ', বুঝে আসলে অমন করবে না,'
একরাতে আমার ফিরতে বেশ রাত হয়ে গেলো,
আঙ্গিনাতে পা রাখতেই কানে শুনতে পেলাম
                      এক করুণ মায়াবী কাঁন্না!
সময়ের সাথে কান্নার আওয়াজ বাড়ছেই,
মুঠোফোনের টর্জ জ্বালিয়ে কাছাকাছি গেলাম,
আনন্দে মন ভরে গেলো– 'সে-ই অবুঝ'
আরো দুটো অবুঝের জন্ম দিয়েছে,
               কারো চোখ ফোটেনি এখনো,
সে-ই অবুঝটার এখন খাবারের প্রয়োজন,
খরচ আরো বেড়ে গলো; গিন্নীর বকাবকিও।


কিছুদিন পর এক রাতে বাড়ি ফিরে দেখি–
গিন্নী মন ভার করে আছে, বিষন্নতা একরাশ!
                 বলে, 'ওদের সারাদিন দেখিনি,
বলেছিলাম না! ও নিমোক হারাম, হলো তো?'
মুখখানি দেখে মনে হলো, সে-ই অবুঝ আর
তার অবুঝ ছানাদের পেছনে খরচার জন্য
গিন্নী যে বকাবকি করতো তা অভিনয়,
                   আমি যা করেছি; সামান্যমাত্র।
গিন্নী-ই তো সারাদিন তাদের ভালো মন্দ দেখতো,
মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো......।


অবুঝ মেয়েটাও কাঁদলো কয়েকদিন–
হঠাৎ হঠাৎ প্রশ্ন করে, 'বেড়াল গুলো কি আর
                          কক্ষনো আসবে না বাবা?'
--------------------------------------------
১০/১১/২০১৭🖋️