আকাশ ভরা মেঘমালা
কালো ঘন মেঘ যাকে বলে, ঠিক সেটাই....
জৈষ্ঠ শেষ হয়ে মাত্র আষাঢ়ে পা পরেছে,
খা খা প্রকৃতি অপেক্ষায় আছে সে বর্ষণের।
কখন বৃষ্টি আসবে!!
কখন সে এসে সব শান্ত করবে??
আমিও অপেক্ষায় আছি,
তবে বৃষ্টির নয় আমার খোকার,
কোন বার্তাও তো এলোনা!!
ভারী বর্ষণ হবে আজ, কোথায় সে?
থেমে থেমে মেঘেরা গর্জন দিচ্ছে।
এখন সে কোথায় আছে কে জানে??
কখনই বা আসবে ?????
ওর অপেক্ষায় পার করলাম তিরিশ কোটি বছর।
খোকা তো এলো নাহ।
আমার ছোট্ট খোকা আজ অনেক বড় হয়েছে, হ্যা তা হয়েছে নিশ্চয়ই।
তিরিশ কোটি বছর তো আর কম সময় নয়!!
কতকাল হয়ে গেছে আমার ছোট্ট খোকার কোন খবরট পেলুম না।
শেষ চিঠিতে লিখেছিলো বিলেতে তার বড় চাকুরি জুটেছে।
বিয়েও করে নিয়েছে এক ফিরিঙ্গিকে।
কতো আশা ছিলো ধুমধাম করে খোকার বিয়ে দিবো।
সব আত্মীয়কে খবর দিবো, কার্ড ছাপা হবে। ধপধপে সাদা ঘোড়ায় চরে লাল শেরওয়ানিতে আমার খোকা বউ নিয়ে আসবে!!
তা আর হলো নাহ...
খোকা ভুলে গেলি কি তোর অভাগা মা কে, তোকে ছাড়া যে আমার এক মুহূর্তও কাটে নাহ রে।
বৃষ্টি আরও ঘন হয়ে আসছে।
ঝড় হাওয়া বইতে শুরু করলো।
খোকা তুই যখন ছোট ছিলি তখন মেঘের গর্জন অনেক ভয় পেতিস, ভয়ে আমার কোলে এসে লুকাতিস। ঝড় বৃষ্টি তোর ভালো লাগতো নাহ। অনেক ভয় হতো তোর।


আজও তো তুমুল ঝড়,
তুই ভয় পেয়েছিস??
ভয় পাসনে,
তোর জন্য আজ গরম খিচুড়ি বানিয়েছি,
সাথে লাল লংকা ভর্তা।
তোর অনেক পছন্দের ছিলো খিচুড়ি।
তোর জন্য বানিয়েছি রে।
রোজই বানাই তোর জন্য,
তুই আসবি বলে,
আর তো আসলি নাহ খোকা।
তোর  অভাগা মা মরার আগে একবার দেখতে চায় তোকে ।
আয়,  আয়,  তোর অপেক্ষায় তিরিশ কোটি বছর অপেক্ষা করে ফেললাম খোকা।
মরার আগে একবার এসে দেখে যা তোর অভাগা মাকে।
আমার একটি মুহুর্তও যে কাটে নাহ রে...