শুরুর জীবনটা কেটেছে মায়ের কোলে
তারপর আস্তে আস্তে পা ফেলা পৃথিবীর বুকে
ধীরে ধীরে কথা বলতে শেখা নিজের মাঝে
একটু একটু করে শিশু থেকে কিশোরে প্রবেশ
শান্ত ভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছে
পেছনে অনেক বাধা তবুও এগিয়ে যেতে হচ্ছে
একদিন ঘুম ভেঙ্গে অনুভব করা কিশোরের জীর্ণতা বিলীন
প্রচণ্ড আবেগে নিজেকে কিছু একটা তৈরি করার স্বপ্নে বিভোর
বিদ্যালয় পর্ব শেষে উচ্চমাধ্যমিকে নিজেকে সমর্পণ
কঠিন পৃথিবীটাকে সবে নিজের মত করে বুঝতে শেখা
সহপাঠী আড্ডা গল্প আর কিছু কবিতার বই
এভাবেই চলছে স্বপ্নের রঙ্গিন দিনগুলো
তখনই গুঞ্জন চলছে বড় হয়ে যাচ্ছি
আগের মত করে আর চলতে পারবো না
কিছুটা নিয়ন্ত্রন নিজের মাঝে আনতে হবে
এভাবে দিনগুলো চলছে এলোমেলো দিশেহারা
দেখতে দেখতে বাড়িতে বিয়ের আনাগোনা শুরু
সবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখা সব কিছু অন্যরকম
তার মাঝেই বিয়ের পিঁড়িতে বসে পরা
নতুন জীবন নতুন মানুষগুলো কেমন যেন ঝাপসা
এর মাঝে খুব সংগ্রাম করে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া
অনেক কিছুতেই বাধা তবু সামনে এগিয়ে চলা
একটা সময় অনুভব করলাম আমার শরীরে অন্য এক অস্তিত্ব
ধীরে ধীরে সে আমার ভিতর বেড়ে উঠতে শুরু করলো
তখন নিজেকে নতুন করে আবার বুঝতে শেখা
অনেক অপেক্ষার প্রহর পেরিয়ে তার পৃথিবীতে আগমন
আমার ভিতরে যে নারী সত্ত্বা তা আজ মা রুপে পরিবর্তিত হল
আজ আমি পরিপূর্ণ এক নারী হয়ে উঠার আনন্দে আত্মহারা
তারপর একদিন আমাকে “মা” বলে ডেকে উঠা
মধ্যবিত্ত পরিবারে তার বেড়ে উঠা
তাই জীবনের প্রয়োজনে আমাকে চাকুরিতে যেতে হয়
একজন নারী যখন মেয়ে থেকে মায়ে পরিবর্তিত হয়
তখন তার মধ্যে অনেক কিছু জন্ম নেয়
সারা দিন অফিস করে বিকেলে বাসে করে যখন বাড়ি ফিরে
তখন আর কোন কিছু তাকে আন্দোলিত করে না
শশুর শাশুরি সন্তান সবার জন্য ভাবতে গিয়ে নিজেকে ভুলে যাওয়া
যতই সমাজ নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে গলা ফাটাক
আমরা নারীরা আজও চারদেয়ালের মাঝেই বন্দি
আজও আমি আমাকে নিয়ে ভাবতে পারি না
নিজেকে কোন সময় দেয়ার মত সময় জীবন আমাকে দেয়না
যখন খুব ক্লান্ত হয়ে যাই তখন ভাবি একটু বিশ্রাম কি আমি পাবো
কখনও কি আমি মুক্ত আকাশে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবো
আর চিৎকার করে বলতে পারবো......  তোমরা আমাকে একটু ছুটি দাও