চোখের মাঝে ভেসে উঠে আমার
গাঁয়ের মায়াভরা ছবিখানি,
কত স্মৃতি আজ হৃদয়ে চুপিচুপি
দিয়ে যায় নীরব হাতছানি।
গাঁয়ের পাশের শান্ত ছোট নদীর
অবিরাম আঁকাবাঁকা বয়ে চলা ,
দস্যি ছেলেদের নদীর জলে ডুব
সাঁতারের ভালবাসার লুকোচুরি খেলা।
চঞ্চলা মেয়েদের কলসি কাঁখে
এলো চুলে আলতা পায়ে হেঁটে চলা,
দূরে রাখালের ব্যস্ত মাঠে রোদের
তাপে নিজেকে ঘর্মাক্ত করে ফেলা।
মনে পড়ে গাঁয়ের সেই বৈশাখী
মেলা ঝুন ঝুনি বাঁশি আর নাগরদোলা,
কচিকাঁচাদের দলছুটে চারপাশ
হই হল্লোরে আনন্দে মাতিয়ে তোলা।
বর্ষায় পুকুর থেকে শাপলা পদ্ম
ডুব সাঁতার কেটে কুড়িয়ে আনা,
দস্যিপনায় আনন্দ চিত্তে এই ফুলে
মালা গেঁথে দৌড় মেলে স্বপ্ন ডানা।
শরতে কাশ বনে খালি পায়ে
এলোমেলো দল বেঁধে ছুটে চলা,
দুরন্ত স্মৃতিময় সেই দিনগুলো
মন থেকে কখনো যায়না ভোলা।
শীতে খেজুর গাছে চড়ে গেছোর
চোখ ফাঁকি দিয়ে রস খাওয়া,
স্নিগ্ধ ভোরের মিষ্টি কুয়াশার
নরম সোনা রোদের কোমল হাওয়া।
হেমন্তে নবান্নের উৎসবে মা
খালাদের ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়া,
গাঁয়ের নিষ্পাপ ভালবাসা আজও
হৃদয়ে স্মৃতির পাতায় দেয় ধরা।
বসন্তে ফাগুনের আমন্ত্রণে চারিদিকে
নতুন জীবনের প্রশান্তির আহ্বান,
হলুদ পাতা ঝরে গিয়ে প্রকৃতির মাঝে
দিয়ে যায় ভালবাসার সবুজ প্রাণ।